হৃদয় ভাঙছে মোদির, নেপালের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান

হৃদয় ভাঙছে মোদির, নেপালের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান

হৃদয় ভাঙছে মোদির, নেপালের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

নেপালে চলমান সহিংস বিক্ষোভে ২২ জনের প্রাণহানি ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি নেপালের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নেপালের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দেশটির নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মোদি।

মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মোদি বলেন, নেপালে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তা হৃদয়বিদারক। বহু তরুণের প্রাণহানিতে আমি মর্মাহত। নেপালের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাদের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমি নেপালের সকল ভাই-বোনদের প্রতি শান্তি বজায় রাখার বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বৈঠকে বসছে। মঙ্গলবার বন্যা দুর্গত পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশ পরিদর্শনে গিয়ে এসব মন্তব্য করেন মোদি।

এর আগে, সোমবার নেপালে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী দেশটির সংসদ ভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২০ জন নিহত ও আরও শত শত মানুষ আহত হন। সহিংসতা চরমে পৌঁছালে সরকার গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। একই সঙ্গে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়।

মঙ্গলবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী অলি প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেলের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, ‌‌সমস্যার সমাধান সহজতর এবং সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম করার জন্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

এদিকে, বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী সংগঠকরা জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন ‌‘জেন-জি আন্দোলন’ নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে তারা সরকারের দুর্নীতি, বৈষম্য বৃদ্ধি এবং তরুণদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগের অভাবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, নেপালের প্রতি পাঁচজনের একজন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং তরুণ বেকারত্বের হার ২২ শতাংশের বেশি।

মঙ্গলবার কারফিউ অমান্য করে বিক্ষোভকারীরা টায়ারে আগুন ধরিয়ে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রাজনীতিবিদদের বাড়িঘরে আক্রমণ করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, দেশটির কয়েকজন মন্ত্রীকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অলির সরকারি বাসভবন এবং সিংহ দরবার প্রশাসনিক ভবনের কিছু অংশেও আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ভারী ধোঁয়ার কারণে কাঠমান্ডুর প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অলির পদত্যাগের খবরে উল্লসিত তরুণরা সংসদ ভবনে ঢুকে দেয়ালে ‘আমরা জিতেছি’ স্লোগান লিখে দেয়। তবে আন্দোলনের নেতারা সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই আন্দোলনের লক্ষ্য জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা, সহিংসতা নয়।

২০০৮ সালে ২৩৯ বছরের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকেই নেপাল রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে। গত ১৭ বছরে দেশটিতে ১৪টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তবে কোনো সরকারই পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। অলি গত বছর চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

ভারতের জন্য নেপালের স্থিতিশীলতা কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন থাকলেও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।