পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে চুক্তি সংস্কারের দাবি সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের
ছবি- বার্তা ২৪।
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি রক্ষায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরা ও শান্তি চুক্তি বাতিল অথবা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর রিটায়ার্ড আর্মফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) ক্লাবের হেলমেট হলে আয়োজিত ‘সমস্যাসংকুল পার্বত্য চট্টগ্রাম: শান্তির অন্বেষণ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা’ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন রাওয়ারর প্রেসিডেন্ট কর্ণেল (অব) আবদুল হক।
বক্তারা বলেন, আদিবাসী, নৃগোষ্ঠী, সেটেলার, সেটেলাম বাঙালি শব্দগুলো বাদ দিতে হবে। শুধু মাত্র চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাদের নিয়ে আলোচনা না করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জাতিগোষ্ঠীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে শান্তি আলোচনার তাগিদ দেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেজর জেনারেল (অব) কামরুজ্জামান। তিনি পার্বত্য অঞ্চলের শাসন ও শাসকদের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন৷ বর্তমান সময়ে এসে এখানে যে সমস্যা আছে এর সঙ্গে ভারত জড়িত। এ কারণে সমস্যার সমাধান হবে না, যদি না আমরা দেশ প্রেম জারি রাখি। এছাড়াও বিদেশি গোয়েন্দাদের প্রলোভন ও জাল থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
সিএসডি সম্প্রতি জোট সমন্বয়ক থোয়াইং চিং মং শাক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে সমস্যা সেগুলো উথ্যাপন করতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রাম বললেই মনে করি, চাকমা, শন্তুলারমার একটা বাহিনী ছিল- জেএসএস। সেই জেএসএস থেকে আজ সাতটা দল তৈরি হয়েছে। এই দলগুলো তৈরির পেছনে কারণ কী? আমরা রাঙামাটিকর লিজ দিয়েছি চাকমাদের হাতে, বান্দরবানকে লিজ দিয়েছি মারমাদের হাতে, আর খাগড়াছড়িকে লিজ দিয়েছি ত্রিপুরাদের হাতে। কিন্তু আমাদের বলা হয় উপজাতি। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। এই পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার স্বাদ নিতে পারিনি, জুলাই ২৪ এর স্বাধীনতার স্বাদও নিতে পারিনি। তার একমাত্র কারণ এই তিনটি জাতির কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম লিজ দেওয়া আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে, নয় তো পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হতেই থাকবে। এই ষড়যন্ত্র কারণ অনেক, তা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। পাহাড়ের যারা বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবে, তাদের বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে কেউ ভাবে না। কিন্তু আমরা আলোচনায় বসি, শন্তুলামরাসহ যারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের সঙ্গে। তাদের উস্কানিতে তৈরি হচ্ছে নাথান বং সহ অনেক সংগঠন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী, নৃগোষ্ঠী, সেটেলার, সেটেলাম বাঙালি শব্দগুলো বাদ দিতে হবে। আপনারা ঢাকায় বসে বসে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন- পাহাড়ি বাঙালি বলেন, মানে কি? আপনিও পাহাড়ি, আমিও পাহাড়ি, যে পাহাড়ে বসবাস করে তারাই পাহাড়ি। আমরা কখনো বলিনি, আপনারা সমতলের বাঙালি, কেন আমাদের আলাদা করে বলা হবে। আমাদের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে বলা হোক।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নিরসনে সবার মধ্যে সমবণ্টন করতে হবে। পাহাড়ে ভূমিহীনদের ভূমির ব্যবস্থা করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা কেন্দ্রীয় স্বপ্ন না দেখে সমস্ত জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। তবেই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বা পশ্চিমারা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে বাংলাদেশ আর্মির উল্লেখ করে এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মাহমুদ হোসেন বলেন, আমি ১৯৮০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে সাত বছর ফ্লাইং করেছি। তখন আমি দেখেছি বাংলাদেশ আর্মি পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা বজায় রাখতে কত প্রাণ দিয়েছে, সে কারণে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের একটি অংশ হিসেবে রয়েছে।
অনেকেই অনেক কথা বলবেন- আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চাই, আর্মির উপস্থিতি চাই না, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম স্পেশাল প্লেস। এখানে আর্মির কারণেই সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা এখনো বজায় রয়েছে।
তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা তখন ৪০০ ক্যাম্পে ফ্লাইং করেছি। সেই ক্যাম্পের সংখ্যা কোথায় নেমে এসেছে। আমি দেখেছি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর বিভাগের লেফটেন্যান্ট ক্যাপটেন দের যে ধরনের কমিটমেন্ট ছিল এখন সেই সেই কমিটমেন্ট আছে কিনা আমি জানি না। আগে পাহাড়ের যে ইতিহাস আমাদের পড়ানো হতো সেই ইতিহাস প্রেক্ষাপট এখনো পড়ানো হয় কিনা এটা আমি জানি না। এগুলো দেখার বিষয় আছে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ১৯৮০ সাল অথবা ১৯৯০ এর দিকে যে ব্যবস্থাপনা ছিল যে অর্ডারটা আমাদের এস্টাব লিস্ট করতে হবে। নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে তাদেরকে বোঝাতে হবে। তাহলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আর কোন ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।
পার্বত্য অঞ্চলে আমাদের যে বাঙালিরা আছে তাদের মধ্যেও তেমন নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারেনি। সেটা গড়ে তুলতে হবে। সম্প্রতি যে ঘটনাটা ঘটেছে একই ঘটনা ২০১৭ সালেও ঘটেছিল। তখনো কিন্তু এক গুজবের উপরে বহু মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই গুজবটা কারা ছড়ায় আমরা কিন্তু জানি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইন্ধনে সেখানে ইউপিডিএফ সহ যে সশস্ত্র বাহিনীগুলো আছে তারা এই গুজবগুলো ছড়ায়। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে গুজব ছড়ানোর যে তাদের মিডিয়া, সেটি খুব শক্ত।
তিনি বলেন, পত্রিকায় হেডলাইন হচ্ছে ১৪৪ ধারা উঠে গেছে পাহাড়িরা আতঙ্কে। আতঙ্কে হচ্ছে তাদের জিনিসপত্র ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কি বাঙালিরা নেই?

তিনি বলেন, পাহাড়ে কোন সমস্যা হলে আমাদের বুদ্ধিজীবীরা একপেশে বিবৃতি বা মন্তব্য করেন। তারা নিজেরা না বুঝে, না জেনে যে বিবৃতি দেওয়া শুরু করে, তাতে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মনে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া জন্ম দেয়। বুদ্ধিজীবীদের একপেশে বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে একটা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
শান্তি চুক্তির সবগুলো ধারা যদি কার্যকর হতো, তাহলে পাহাড়ের সমস্যা অনেক কমে যেত। শান্তি চুক্তির এই ধারায় সমস্যা রয়েছে সাংবিধানিক সাংঘর্ষিকতা ও রয়েছে। আমি মনে করি, ১৯৯৭ সালে যে চুক্তি হয়েছে, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে প্রয়োজনের পরিবর্তন হয়েছে, সেখানকার মানুষের ধারণার পরিবর্তন হয়েছে, তাই এই শান্তি চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন বা পুনর্বিবেচনা একান্তই প্রয়োজন। এটা পুনর্মূল্যায়ন না করা গেলে পাহাড়ের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
পাহাড়ের সমস্যায় সশস্ত্র বাহিনীকেই শুধু সংযুক্ত করলে হবে না আমাদের দেশের মানুষদেরও এখানে সংযুক্ত করতে হবে। গত ৫০ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে উন্নয়ন বাজেট দেওয়া হয়েছে, সেই পরিমাণে আমার জেলায় তো দেওয়া হয়নি, তবে কেন পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো উন্নত হয়ে ওঠেনি সে বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে।
রাওয়া চেয়ারম্যান কর্নেল আবদুল হক বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত সামরিক ও বেসামরিক সুধীবৃন্দ এবং আমাদের শ্রদ্ধেয়া রাবারী সহকর্মীগণ এসেছেন, অনেক মহিলারাও এসেছেন। সকলকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শুরুতেই একটি কথা বলতে চাচ্ছি, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা কোনো বিশেষ অতিথি, প্রধান অতিথি, সভাপতি, এগুলো রাখিনি। এটা একটা ভিন্নতা এনেছি আমরা এই অনুষ্ঠানে। আজকে যে বিষয়ের উপরে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনাটা হচ্ছে, সেটার সাবজেক্ট আপনারা দেখছেন: ‘সমস্যা সংকীর্ণ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তির অপারেশন’। আমি প্রথমেই আমাদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভাই, সামনে যাই, এখান থেকে করা যায়। যে এই প্রতিষ্ঠান দেশের এক দশমাংশ এখনো পর্যন্ত দেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে রাখতে পেরেছেন। যদি এখন কোনো ক্রেডিট পাওয়ার কোনো ইনস্টিটিউশন থাকে, দ্যাট ইজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এর সাথে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবদানকেও এখানে অস্বীকার করার কিছু নেই। দুর্গম পার্বত্য এরিয়ায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া সেখানে টিকে থাকা অসম্ভব ছিল। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে, অনেকে আহত নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪০০ জনের মতো শহীদ হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য। আমরা তাদের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ তাদের শহীদ হিসাবে তাদেরকে জান্নাতের উচ্চ আলা দান করুন, আমিন। সুধীবৃন্দ, রাওয়া (রিটার্ড আর্মড ফোর্সেস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন)। রাওয়া সংক্ষেপে, কেন রাওয়া এটা করছে? রাওয়া নম্বর ইজ দ্যা অর্গানাইজেশন ফর রিটার্ড কমিউনিটি কমিউনিটি। এটা একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান আমি মনে করি। কেননা আমরা প্রত্যেকে যারা অবসর গ্রহণ করেছি, এই জাতির অনেক অবদান আছে আমাদের উপরে। এই জাতি অনেক অর্থ ব্যয় করেছে আমাদের পিছনে। আমাদেরকে লালন পালন করেছে। আমাদেরকে এই জাতি তাদের ১৮ আমি মনে করি অর্থ আমাদের জন্য ব্যয় করছে। সুতরাং জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ, জাতির প্রতি দায়িত্বের মনের সেই অনুরোধ জাগ্রত হওয়ার কারণে, আজকে আমরা শুধু এটা নয়, বিভিন্ন বিষয়েও আবার অবদান রাখার চেষ্টা করছি, আপনারা জানেন। ইতঃপূর্বেও আমরা জাতীয় পর্যায়ের একটা অনুষ্ঠান করেছিলাম একটি ক্রান্তিলগ্নে। রাওয়ার কাজ শুধু একটি অফিসারদের ওয়েলফেয়ার দেখা নয়, যেটা দেখা হচ্ছে। বাট, এর বাহিরে গিয়েও আমরা জাতির প্রতি আমরা যাতে বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারি, সেটার জন্য ভবিষ্যতেও আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। সুধীবৃন্দ, শান্তি প্রতিষ্ঠা পার্বত্য চট্টগ্রাম দীর্ঘদিনের, আজকের কোনো নতুন সমস্যা নয়, বহুদিনের সমস্যা। এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা সেই অংশটুকু বাংলাদেশের ভবিষ্যতে রাখা যাবে কিনা সন্দেহ আছে। আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকার, এটা স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, দেশের শত্রুদের চক্রান্ত, তারা করতেই থাকবে, ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু সেটা থেকে বাঁচার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, আমাদের জাতীয় ঐক্য। এই সকল বিষয়ে দল-মত, বর্ণ নির্বিশেষে ছবিটা নিয়ে আসেন। সকলকে একত্রিত হতে হবে।
রাষ্ট্রপতি ক্ষমতা থেকে উঠেই বাংলাদেশের এক দশমাংশকে রক্ষা করার জন্য জাতীয়ভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পলিটিশিয়ানদের একত্রিত হতে হবে। আরেকটা জিনিস বলছি। এটা কি ইজিতের মিলিটারি প্রবলেম? এটা কি শুধু সেনাবাহিনীর সমস্যা? আজ পর্যন্ত, এখন পর্যন্ত সবাই মনে করে এটা সেনাবাহিনীর সমস্যা। এখানে রক্ষা করার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর, বানুমালী লাগবে না। বানুমালী স্থানগুলোর জন্য সেনাবাহিনী। মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ থাকে, সেনাবাহিনী সেখানে প্রশাসন চালানোর জন্য। তাহলে দেশের অন্যান্য অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব কি? ইন্ডিয়ার কাশ্মীর এ এটা কি শুধু সেনাবাহিনী সেখানে দায়িত্ব পালন করছে? আজকে ৭৭ বছর ধরে অকুপাইড কাশ্মীরকে তারা ধরে রেখেছে। এটা কি অনলি ফর মিলিটারি? আমাদের এই চিন্তাটা আজকে আমরা দুটাতে চাই আপনাদের মাথায় সবার জন্য। এই জন্য আজকে শুধু মিলিটারিকে নিয়ে এখানে হয় নাই। আমরা এই অনুষ্ঠানটা করছি সবাইকে নিয়ে। এখানে সামরিক-বেসামরিক বুদ্ধিজীবীরা আছেন, সামরিক-বেসামরিক নেতারা আছেন, এখানে সাংবাদিকরা আছেন, আরো অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা আছেন। আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আজকে এই কথাগুলো সারা বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল প্রচার হচ্ছে এবং হবে। আপনাদের সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনারা যখন কথা বলবেন, এই জিনিসটা গুরুত্ব দিবেন। ইট ইজ নো ওয়ান মিলিটারি প্রবলেম। এটাকে আমরা সম্মিলিতভাবে, সমন্বিতভাবে আমরা এটাকে ওপরে রাখবো। শুধু মারে। রাখতে পারবো? না। আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনী এককভাবে ভূমিকা রেখে তারা অনেকেই এখানে উপস্থিত। যাদের জীবন যৌবন সেখানে বিসর্জন দিয়েছেন। তারা ওখানে অনেকেই আছেন। আমাদের সিনার ভাইস চেয়ারপার্সন আছেন। মিডিয়া ফাইটের প্রতীক। আমি একজনের নাম বললাম, শুধু আমাদের এখানে, উনি ভাইস চেয়ারপার্সন। সুবহানাল্লাহ। এছাড়াও অনেকে আপনারা দেখতে পাবেন। এখানে অনেক কমান্ডার আছেন। আমাদের সৈয়দ শাহিন সাহেব বসা। আমাদের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদ আলম খান, আপনারা তাকে চেনেন? এখানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফিজুর রহমান সহ জেনারেল আকবর, এর ফল দলে আকবর জেনারেল আব্দুল মতিন, যিনিও ছিলেন ব্রিগেডিয়ার সাফার আরও অনেকেই এখানে উপস্থিত আছেন। আমি সবার নাম নেয়ার সময় থাকবো তবে। আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, করছি, তারা তাদের নিজেদের অনেক ড্যাকট্রিকাস এখানে সৃষ্টি করেছেন। ঠিক, আপনারা আজকে দুই একটা কথা না বললেই নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এবং বাঙালি, পাহাড়ি এবং বাঙালি সবাই বাংলাদেশি। বাঙালি বলা হয় বাংলা ভাষা বলার কারণে, পাহাড়ি বলা হয় তাদের নিজস্ব জাতিসত্তার ভাষার জন্য, সংস্কৃতির জন্য। এই দুই পক্ষের সম্মিলিত হওয়া ছাড়া তাদের সমানভাবে, তাদের বৈষম্যহীনভাবে তাদেরকে লালন পালন করা ছাড়া সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে কিনা, সন্দেহ আছে। আজকে আমি সকালে দুগুণ শান্তি গেলাম। পার্বত্য চট্টগ্রামের ইমেজে গিয়ে দেখে একটা ছবিও সেখানে ৫২ শতাংশ বাঙালিদের নাই। আমি পাইনি। আমি জানি না এখানে জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিমও আছেন। উনার অবদান অস্বীকার করার নাই। একটা ম্যাগাজিনের টাইপস কিংবা নিউ ইয়র্ক একটি ম্যাগাজিনের স্যারের স্বচিত্র প্রতিবদান আসছিলো, আপনারা জানেন। যে শান্তি প্রতিষ্ঠা, যে শান্তি চুক্তি হয়েছিল, সেই শান্তি চুক্তি একটা ছিলো সম্পূর্ণ রূপে একটি আন্তর্জাতিক অথবা নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার জন্য, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। ঠিক, ঠিক। কেননা আমি খোলখুলে বলতে পারি সেইদিন আমি ২৬শে ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সাল। আমরা স্টাফ কলেজ থেকে একটা টিম জেনারেল মতিনের অফিসে ছিলাম সেই সময়। আমাদের জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল মতিন বীর প্রতীক। উনার অফিসে ছিলাম, তার ডেপুটি মিশনাল ভিও। তাই আজকে তিনি জিজ্ঞেস করছেন, স্যার, আজকে শান্তি চুক্তি হচ্ছে। বানছড়িতে, রুপন ছাড়া, কাতারছড়িতে, আপনি এখানে কেন? তিনি বললেন, আই ডোন্ট নাথিং অ্যাবাউট দ্যাট। আই ডোন্ট নাথিং। এখনো যারা মতিন জীবিত আছেন। এবং আমার সাথে যারা কোস্টম্যান ছিলেন, আকবর কবির আরো অন্যান্য, তারা সাক্ষী থাক। এখন ভোদম কি শান্তি চুক্তিটা হয়েছে? এখানে বাঙালিদের চরম বৈষম্য ছিল। এরাও ডমিনেট করছে, তারা শুধু সেবা দিচ্ছে। বীর, আপনারা যারা উপজাতি আছেন আপনারা আমার কথা হয়তো বুঝতে পারবেন না, কারো মানুষ। সকল মানুষ সমান। সাদা হোক কালো হোক, ধর্ম বর্ণ রীতি সে সবার মানুষ সমান। এই মুসলিম।
প্রতিটি আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। যেমন বসে থাকা সেনাবাহিনী। আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামে হবে। চক্রান্ত দেয় আর যদি হয়, হটাও, হটাও চলে যাও। বুঝতে হবে আমাদের। যাই হোক, আমি এখানেই শেষ করছি। শুধু আপনাদের কাছে অনুরোধ, আজকে বক্তা অনেক। আপনারা, আমরা সবাই ঘটনা জানি – কি হয়েছে, কি হচ্ছে, কি ঘটবে – এগুলো আমরা জানি। সেই ঘটনার দিকে না গিয়ে, আপনাদেরকে অনুরোধ করব। ওহ, আমি আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি, ব্রিগেডিয়ার সলজার। স্বরূপ স্যার এখানে আছেন, উনিও ব্রিগেডিয়ার ছিলেন। ব্রিগেডিয়ার সলজার। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব, যারা কথা বলবেন। আমরা জাতীয়ভাবে সমস্যাটা কীভাবে এখানে ইনভলভ করতে পারি পুরো জাতিকে, পুরো গভর্নমেন্টের প্রশাসনকে, সেক্রেটারি-দেরকে, বুদ্ধিজীবীদেরকে। এই জিনিসটা গুরুত্বপূর্ণ। এবং আপনারা, আলেম-ওলামারা যারা আছেন, তাদেরকে আমরা কীভাবে ইনভলভ করতে পারি। এই জিনিসগুলো আপনারা খুঁজে বের করবেন। আজকে এই, আমরা রিকমেন্ডেশনগুলো আমরা সরকারের কাছে পাঠাবো, সামরিক বাহিনীর কাছে পাঠাবো, পলিটিশিয়ানদের কাছে পাঠাবো। আপনারা যা যা বলবেন। মহান আল্লাহ, আমাদের এই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষার সেই শক্তি, সাহস আমাদেরকে দান করুন, যাতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তৌফিক দান করুক। এবং আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে আসার জন্য, রাওয়া চেয়ার হিসেবে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা বোধ জানাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর করিব তালুকদার বলেন, পাহাড়িদের মধ্যে নেতৃত্বের সংকট রয়েছে। পাহাড়ে গুজব ছড়ায় ইউপিডিএস এবং পার্শ্ববর্তী দেশ। গণমাধ্যমে একপেশে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। পাহারে কিছু হলে না বুঝে না জেনে একদল বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিতে শুরু করেন। শান্তি চুক্তি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এটা পূনমুল্যায়ন ও পূনবিবেচনা প্রয়োজন৷ এই সমস্যার সঙ্গে দেশের সবার একত্রিত হতে হবে।
চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাহফুজ পারভেজ বলেন, প্রকৃত সত্য যে, আমরা বাঙালিরা, যারা ওখানে আছি, তাদের মধ্যেও সেরকম কোনো নেতৃত্ব এখনো পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। এই নেতৃত্বটা গড়ে উঠতে হবে। এই যে ঘটনা রিসেন্টলি ঘটলো, এই ঘটনা একই, একদম হুবহু একই ঘটনা, ২০১৭ সালে আমি ডিসি থাকার সময়েও ঘটেছিল। তখনও কিন্তু এক গুজবের উপরেই বহুত ভাঙচুর, বহু মারামারি হয়েছে। এবং এই গুজবটা কারা ছড়ায়, আমরা খুব ভালোভাবেই জানি যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ইন্দনে, ভারতের ইন্দনে, এই ইউপিডিএফ এবং ওখানে যারা সশস্ত্র গ্রুপ আছে, তারা নিজেরা এটা ছড়ায়। সুতরাং, এবং সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, তাদের এই ছড়ানোটা আমাদের যে মিডিয়া, এই মিডিয়াটা খুব ভালোভাবেই খায়। এবং এই খাওয়ার জন্যই গতকালকে প্রথম পৃষ্ঠার পেপারে আপনারা যদি দেখেন, প্রথম আলোর একটা নিউজ বলছে যে ১৪৪ ধারা উঠে গেছে, কিন্তু এখনো আতঙ্কে পাড়িরা। পাড়িরা খালি আতঙ্কে কেন? ওখানে কি বাঙালি নেই? এখন প্রায় ৫১ পার্সেন্ট জনসংখ্যা সেখানে বাঙালি, তারা তো সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছে ওখানে, কারণ হচ্ছে তাদের জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আপনারা ছবিতে দেখেছেন। কিন্তু যে নিউজটা, সেটা কিন্তু এক পেশের। দুই নাম্বার হচ্ছে, একসময় কথা বলা হতো যে বেইজিংয়ে বৃষ্টি হলে ছাতা ধরা হয়, মস্কোতে… আমাদেরও চিটাগাং হিল ট্র্যাক্সে কোনো একটা সমস্যা হলে, আমাদের যারা ইন্টালিজেন্সিয়া, তারা কিন্তু এখানে বসে নিজস্ব বিবৃতি দেওয়া শুরু করেন। এরা নিজেরা না বুঝে, না জেনে, এই যে বিবৃতিগুলো দেওয়া শুরু করেন, এটা কিন্তু দেশের মানুষের মনে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। এই বিরূপ প্রতিক্রিয়া জন্ম থেকে আমাদের, যেভাবে হোক, আমাদের সেনাবাহিনী বা আমাদের সশস্ত্র বাহিনী থেকে এরকম একটা ইনিশিয়েটিভ, আমার মনে হয়, নেওয়া প্রয়োজন। যে ইনিশিয়েটিভটা আমরা এই বুদ্ধিজীবীদেরকে এরকম একপেশে বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারি। কিছুক্ষণ আগে গণমনির দেওয়ান শান্তি চুক্তির ব্যাপারে অনেক কথা বলে গেছেন। আমি মনে করি শান্তি চুক্তির সব গুলো ধারা যদি ইমপ্লিমেন্টএবল হতো, তাহলে এ পর্যন্ত এটা ইমপ্লিমেন্ট হয়ে যেত। এই ধারায় সমস্যা আছে। এটার সঙ্গে সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারা আছে। সুতরাং, এটা ইমপ্লিমেন্টএবল কিনা, সেটা প্রশ্ন উঠতেই পারে। আমি মনে করি, ১৯৯৭ সালে যেই চুক্তি হয়েছে, এই দীর্ঘ সময়ে, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, সেখানকার নিড চেঞ্জ হয়েছে, সেখানকার মানুষের ধারণা চেঞ্জ হয়েছে। এই শান্তি চুক্তিটার পুনবিবেচন বা পুনর্মূল্যায়ন একান্তভাবে প্রয়োজন। এটা যদি আমরা মূল্যায়ন না করতে পারি, তাহলে আমাদের এই বিচার সিচুয়েশন কোনো মতেই আমরা সমাধান করতে পারবো না। আমি আর আমার বক্তব্য বাড়াবো না। অনেক বক্তা আছেন। একটাই খালি জিনিস শেষ পর্যন্ত বলতে চাই যে, আমাদের শুধু সশস্ত্র বাহিনী আর যে বাঙালিরা চিটাগাং হিল ট্র্যাক্সে আছে, তাদেরকে সম্পৃক্ত করলে হবে না, আমাদের দেশের মানুষকে এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। না, আমার জেলার মানুষ কেন বলতে পারে না যে গত ৫০ বছরে চিটাগাংয়ের একটা জেলা, চিটাগাং হিল ট্র্যাক্সের একটা জেলায় যে উন্নয়ন বরাদ্দ হয়েছে, তার ১০ ভাগের এক ভাগ উন্নয়ন বরাদ্দও তো আমার জেলায় হয়নি! সুতরাং, চিটাগাং হিল ট্র্যাক্সের মানুষের এত ক্ষোভ কেন, এটা মানুষকে বুঝতে হবে। দেশের মানুষকে এটার আওয়াজ তুলতে হবে। ও, সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ধন্যবাদ স্যার।
আমার দেশ সংবাদপত্রে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, শান্তি বাহিনী ১৯৭৬ সালের আগে বাংলাদেশে কোনো আগ্রাসন চালায়নি৷ ফলে মনে হচ্ছে ভারত একটি অস্ত্র হাতে রেখেছে, যেটি সময় সুযোগ মতো ব্যবহার করছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। যে সময়ে ভারতের পছন্দের সরকার ক্ষমতায় থাকবে না তখন তারা এই অস্ত্র ব্যবহার করবে।
এই যে ভারতীয় আগ্রাসনের সঙ্গে আমাদের স্থানীয় একটি গ্রুপ জড়িত আছে। এটা শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা না। আমাদের রাজনীতিবিদদের একটি অংশ ভারতের আগ্রাসনের সহযোগী। যার বড় নাম ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। এটা আমাদের মনে রাখা সরকার। আপনারা হয় জানেন, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন কৃষ্ণ শ্রীনিবাস। তিনি তার লেখা ‘ দ্যা জামদানী রেভুলোশন’ এ লিখেছেন। বাংলাদেশে তার দায়িত্ব শেষ উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা তাকে বলেন, পাহাড়ে আসলে শান্তি বাহিনী বলতে কিছু নেই। আপনারা (ভারত) বলবেন, এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তৈরি। যা অপরাধ হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজেদের স্বার্থে করছে। শেখ হাসিনার এই প্রস্তাবের জবাবে তিনি আরও লিখেছেন, শান্তি বাহিনী নেই, এটা বললে কেউ বিশ্বাস করবে না।
তার মানে আমি যেটা বলতে চাই তা হলো- বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের যে পরিকল্পনা তার বড় একটি ডকট্রিন হলো শেখ হাসিনা ও তার সমর্থকরা। এটা যদি আমরা না বুঝতে পারি তাহলে আসল সমস্যাই বুঝতে পারবো না। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো দিয়ে ভারত বাংলাদেশকে যাচাই করছে। আমরা আশা করছি আগামী ৪ মাস পর নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসবে তাদের ক্ষেত্রে ভারত তার এই অস্ত্র ব্যবহার করবে। এই বিষয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। সেনাবাহিনীর প্রকৃত ইতিহাস দেখি ১৯৭১ সালের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে গত ৫৪ বছর ধরে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। আমাদের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে সেনাবাহিনী বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে কিন্তু সেনাবাহিনী সেটি গোলন রাখে। প্রকাশ না করার পেছনে কারণ থাকতে পারে সরকার প্রকাশ করতে দেয়নি। কিন্তু এখন এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাদের প্রকাশ করা উচিৎ আজ পর্যন্ত কত সেনাকর্মকর্তা ও সেনা সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রামে শহীদ হয়েছেন। তাদের নাম জাতির জানা দরকার। তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন দিয়েছে।
গত ১৫ বছর ভারতের দালাল ক্ষমতায় ছিলো। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সেনাবাহিনী বিতর্কিত হয়েছে। কিছুসংখ্যক সেনা কর্মকর্তার উচ্চাভিলাষ ও সরকারের কারণে বিতর্কিত হয়েছে। ফলে জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। একটা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব টিকে থাকতে পারে না যদি সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব থাকে। কাজেই এই দূরত্ব মিটাতে হবে। এই দূরত্ব মেটাতে এই তিন পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর বীরত্বের কথা জনগণকে জানাতে হবে। ফলে জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে।
সেনাবাহিনীর মধ্যেও দেশদ্রোহী আছে। বর্তমানে দুজন জেনারেল ভারতে মোদির আশ্রয়ে রয়েছে। যার মধ্যে ডিজিএফআইয়ের প্রধানও আছেন। যিনি চার বছর এই দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন কর্মকর্তারা যখন ভারতীয় আশ্রয়ে থাকেন তখন সেনাবাহিনী সম্পর্কে জনগণের সন্দেহ থাকাটা স্বাভাবিক। বিগত সরকারের যে নীতি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে শহীদ হলে লুকিয়ে রাখতে হবে এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। স্বচ্ছতা সঠিক পথ।
পাহাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে সম্প্রতি বাড়ানোর বিষয় তিনি বলেন, পাহাড়ে যারা বসবাস করছেন তাদের ধর্মীয় পরিচয় নয়, বা যারা সমতল থেকে গেছে এটা বিষয় নয়। বরং নিজেদের মেলামেশা দরকার। এখানে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে হবে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আয়োজন করতে হবে। যেখানে সমতল ও পাহাড়ের মানুষ থাকবে। এছাড়া অবশ্যই সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়াতে হবে, যাতে করে জরুরি যেকোনো মুহূর্তে তারা সাড়া দিতে পারে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) মানিষ দেওয়ান চাকমা, সাবেক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কাবির তালুকদার, সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইউ খান তেঈন, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক সালাউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, যুগান্তর সম্পাদক ও কবি আব্দুল হাই, সাবেক মেজর জেনারেল আকবর ফজলে এলাহী, সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিরাজুল ইসলাম, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল আল ইউসুফ, সাবেকবিগ্রেডিয়ার জেনারেল তুষার কান্তি চাকমা, পার্বত্য নিউজের সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ, বীর প্রতীক ও সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আহমেদ জাকারিয়া, সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু তাহের জহিরুল, সাবেক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শাহিদুল আলম খান, সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল মাহমুদ হোসাইনসহ সাবেক বিভিন্ন পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।