হালদায় মা মাছ, ডলফিন ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় কমিটি করে দিলো হাইকোর্ট
 
নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র নালদা নদীতে ডলফিন হত্যা রোধ, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীব বৈচিত্র এবং সকল প্রকার মা মাছ রক্ষাকল্পে ১৯ মে মঙ্গলবার ভার্চুয়াল বেঞ্চে কমিটি’করে দিয়েছে উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট)।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রতিবেদন দেখার পর বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়া হয়। এ মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর তীরের এলাকার সংসদ সদস্যরা কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। তাদের উপদেশ অনুযায়ী এ কমিটিকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে এ আদেশে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে সভাপতি এবং চট্টগ্রামের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড,পরিবেশ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি; জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ছাড়াও হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, রাউজান, রামগড় ও মানিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসকের মনোনীত দুইজন হালদা গবেষক, দুইজন এনজিও প্রতিনিধি এবং নদী তীরবর্তী উপজেলা চেয়ারম্যানদের কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই কমিটিকে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে আদেশে।
এ আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার বলেন, পরিবেশ, জীববৈচিত্র ও চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন রক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে দুটি প্রতিবেদন এদিন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
“সেখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি সুপারিশের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে হাই কোর্ট ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে।” অমিত তালুকদার আরো বলেন, হালদা নদীর মা মাছ, ডলফিন সহ জীববৈচিত্র রক্ষায় নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রতিবেদনে তুলে ধরে পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে, তারা নদী তীরের দুটি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। ১৭টি বালুমহালের ইজারা বন্ধ করা হয়েছে। জাল জব্দ করে তা ধ্বংস করা হয়েছে। বালু পরিবহনকারী সাতটি নৌযান জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত নৌযান যেন না চলে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। “তারপরও ভবিষ্যতে যাতে একটি ডলফিনও মারা না পড়ে এবং মা মাছসহ হালদার জীববৈচিত্র যাতে ঠিক থাকে, সেই বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয় এই প্রতিবেদনে।”
বিষয়টি আগামী ২৮ মে পরবর্তী শুনানির জন্য ভার্চুয়াল এ আদালতের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছে বলে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি আব্দুল কাইয়ুম লিটনের জনস্বার্থে করা একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গেল মঙ্গলবার (১৯ মে) পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত (হাই কোর্ট)। সেই সঙ্গে ডলফিন রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালককে ইমেইলে আদালতকে জানাতে বলে মঙ্গলবার ফের শুনানির জন্য রেখেছিল হাই কোর্ট। সেই অনুযায়ী চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের দুটি প্রতিবেদন জমা পড়ে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে। আদালতে উপস্থাপনের পর আদালত কমিটি গঠনের এ আদেশ দেয়।
