মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগঃ গাম্বিয়ার আবেদন নাকচ, তথ্য দেবে না ফেসবুক! - Southeast Asia Journal

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগঃ গাম্বিয়ার আবেদন নাকচ, তথ্য দেবে না ফেসবুক!

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক অপরাদ আদালতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার প্রেক্ষিতে দেশটির কর্মকর্তারা কখন কিভাবে, কার সঙ্গে কি আলোচনা করেছেন এসব তথ্য চেয়ে অনুরোধ করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গাম্বিয়ার আবেদন নাকচ করে দিয়ে কোন ধরনের তথ্য দিবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে তথ্য না দেয়ার পক্ষে এমন যুক্তি উপস্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ‘গত জুনে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)-এ মামলা করার পর ফেসবুকের কাছে এ আবেদন জানায় গাম্বিয়া। সেই অনুরোধে সাড়া না দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।’

ফেসবুক বলছে, ‘আমরা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিশ্বের কোনো অঞ্চলে ধ্বংস বা নির্যাতনের পক্ষ আমরা নই। আমরা চাই এসবের সুষ্ঠু বিচার হোক। তবে, আইন ভেঙে কাউকে আমরা তথ্য দিতে পারি না।’
তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল দাওয়াদা জাল্লোও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি নেদারল্যাডন্সের দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত (আইসিজে) মিয়ানমারকে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত করে এবং গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানায়।
সে সময় ওই মামলার বাদি গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর তাম্বাদু বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী এবং বেসামরিক বাসিন্দারা সংগঠিত হামলা চালাচ্ছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, মায়ের কোল থেকে শিশুদের ছিনিয়ে নিয়ে জ্বলন্ত আগুনে ছুঁড়ে মারছে, পুরুষদের ধরে ধরে মেরে ফেলছে, মেয়েদের ধর্ষণ করছে এবং সব রকমের যৌন নির্যাতন করছে।’
সেই রায়ে রাখাইনে যে রোহিঙ্গারা আছেন, তাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য মিয়ানমারকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেন। অন্তর্বর্তীকালীন ওই রায়ে মিয়ানমারের প্রতি চারটি নির্দেশনাও দেয় আইসিজে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যার বিষয়ে সে দেশের গণমাধ্যমকে সরকার কোনো খবর প্রকাশ করতে বাধা দেয়ায় ঘটনা আড়ালে থেকে যায় দীর্ঘ দিন। সংবাদ প্রকাশের জেরে আটক করা হয় রয়টার্সের দুই সাংবাদিককও। অন্যদিকে রোহিঙ্গারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গণহত্যার বিষয়ে কোনো পোস্ট করলে সেটি মুছে দিতো ফেসবুক। দাবি করে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা এক্টিভিস্ট। বন্ধ করে দেয়া হয় রোহিঙ্গাদের পরিচালিত বেশ কয়েকটি কমিউনিটি গ্রুপ। এতে গণহত্যার খবর গোপন থাকে। কিন্তু ২০১৭ সালের আগস্টের শেষ সপ্তাহে গণহত্যা ভয়াবহ রূপ নেয়। রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে থাকেন। তখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হতে থাকলে বিশ্বের ‍দৃষ্টি গোচর হয় ঘটনাটি।
পক্ষান্তরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এক তরফা ফেসবুকে রোহিঙ্গা বিরোধী মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করতে থাকে। যার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ফেসবুক। গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের নিন্দা ও ফেসবুকের এমন কার্যক্রমের সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মাধ্যমে। এর পর ফেসবুক মিয়ানমারের কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেন।