উপজাতি সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেওয়ায় মাছ ধরা বন্ধ রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে
![]()
নিউজ ডেস্ক
পাহাড়ের আঞ্চলিক উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাহিদা মতো চাঁদা না দেওয়ায় মাছ ধরা বন্ধ হয়ে গেছে এশিয়ার বৃহত্তর কৃত্রিম মৎস প্রজনন কেন্দ্র রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই লেকে। এতে কর্ম হারিয়ে বিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট খুচরা ও পাইকারি মৎস্য ব্যবসায়ী, মাঝি, শ্রমিকসহ পেশাজীবি হাজারও মানুষ। এর আগে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দীর্ঘ তিনমাস দশদিন মাছ আহরণ থেকে বিরত ছিল জেলার কাপ্তাইয়ের মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
সূত্র মতে, সম্প্রতি তিনমাস দশ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা কাটিতে কাপ্তাই লেকে পুরোদমে শুরু হয়েছিলো মাছ ধরা। এতে নিষেধাজ্ঞা ও করোনা পরিস্থিতি এড়িয়ে অনেকটা প্রানচাঞ্চল্য ফিরেছিলো কাপ্তাই লেকে। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে কাপ্তাই লেকে মাছ আহরণ করা সওদাগরদের কাছে মুঠোফোনে পাহাড়ের একটি সশস্ত্র গ্রুপ ৮ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এছাড়াও আরও মোট ৪টি গ্রুপের জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। গত ২৫শে আগষ্ট এসব চাঁদা পরিশোধের শেষ সময় দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা না পেয়ে গত ২৬ আগষ্ট বুধবার মাঝি ও সওদাগরদের কাছে মুঠোফোনে কাপ্তাই লেকে মাছ ধরতে নামনে নিষেধ করে সন্ত্রাসীরা। নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করে মাছ ধরতে গেলে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয় তাদের। নিজেদের জীবন রক্ষায় গত ২৬ আগষ্ট থেকে মাঝিরা মাছ ধরা বন্ধ করে দেয়।
কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, পাহাড়ের একটি সশস্ত্র গ্রুপ আমাদের কাছে ৮ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই গ্রুপ ছাড়াও আরও মোট ৪টি গ্রুপের জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবি উঠে। গত মঙ্গলবার (২৫ই আগষ্ট) পর্যন্ত ছিল এই চাঁদা প্রদানের আলটিমেটাম দেওয়া সময়। এই সময়ে টাকা পরিশোধ না করায় তারা (চাঁদা চাওয়া গ্রুপের প্রতিনিধি) আজকে সকালে আমাদের জেলেদের মোবাইলের মাধ্যমে বলে তোমরা আর জাল মারিওনা। তিনি জানান, কাপ্তাইয়ের মাছ ঢাকা, যাত্রাবাড়ি, চট্টগ্রামসহ দেশের বাহিরে পর্যন্ত যায়। এ খাতে সরকার প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব পেয়ে থাকে।
জসিম উদ্দিন জানান, কাপ্তাই লেকে জাল থেকে মাছ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিপনন পর্যন্ত হাজারও লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহুর্তে চাঁদার ভারে কাপ্তাই লেকে যদি মাছ আহরণ চিরতরে বন্ধ হয় তাহলে দেশের আমিষের চাহিদায় বড় প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হারাবে এই পেশায় সংশ্লিষ্ট হাজারো মানুষ। সরকার হারাবে রাজস্ব।
স্থানীয় এক মাঝি জানান, আমাদের সওদাগরদের উপরের পার্টি (সন্ত্রাসী গ্রুপ) তাদের কাছে চাঁদা খুঁজে। চাঁদা না দেওয়াই এমন অবস্থা। আমার মাধ্যমে দেড়শতাধিক শ্রমিক দেশের বিভিন্ন স্থান হতে কাপ্তাইতে কাজ করতে এসেছে। এখন যেহেতু মাছ ধরা বন্ধ করতে হচ্ছে তাই এদের সবাইকেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তাকে কেউই এই বিষয়ে অবহিত করেন নি। কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুনায়েদ কাউসার বলেন, আমাদের কেউ অভিযোগ জানায়নি এখনো। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।