দেশের সব ইউএনও’র নিরাপত্তায় অস্ত্রসহ আনসার মোতায়েন
নিউজ ডেস্ক
গত বুধবার (২রা সেপ্টেম্বর) রাতে বাসার ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদার ওপর হামলার ঘটনায় সারাদেশের মাঠ প্রশাসনে কর্মরত সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)দের নিরাপত্তায় তাদের বাসভবনে একজন প্লাটুন কমান্ডার সহ চারজন আনসার সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
গত ৩রা সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে যশোর জেলার ৮ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সরকারি বাসভবনে আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট ড. লুৎফর রহমান জানান, ইউএনওদের বাসায় নিরাপত্তার জন্য আট উপজেলায় ৩২ জন আনসার সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনসার সদস্যরা নিরস্ত্র অবস্থায় থাকলেও শুক্রবার থেকে তাদের হাতে অস্ত্র দেয়া হয়েছে।
একই জেলার অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুসেইন খান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে তার সরকারি বাসভবনে চারজন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আনসার সদস্যদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব তারা যথাযথভাবে পালন করছেন। দেশের উপজেলা কার্যালয় গুলোতে আনসার নিয়োগের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূলক কুমার মণ্ডলও।
এদিকে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে তার বাসভবনে একজন প্লাটুন কমান্ডার ৫ আনসার সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেহেন্দিগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিজুস চন্দ্র দে জানিয়েছেন, জেলা কমান্ড্যান্ট থেকে আনসার নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। এখনও তারা যোগদান করেননি। এছাড়া মুলাদি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে এখন পর্যন্ত আনসার সদস্য এসে পৌঁছায়নি বলে ইউএনও পিজুস চন্দ্র দে জানিয়েছেন।
এছাড়া বরগুনা জেলার ছয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিরাপত্তায় ২৪ জন অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা আনসার ভিডিপির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু সোলায়মান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় বরগুনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনায় অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মোতায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা কর্মকার ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃলা দেব, নিজ নিজ সরকারী বাসভবনে আজ শুক্রবার সকাল থেকেই অস্ত্রসহ ৪জন করে আনসার সদস্য নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি সাউথইস্ট জার্নালকে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)দের নিরাপত্তায় তাদের বাসভবনে আনসার নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা কর্মকার।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩রা সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে দেখে এসে দেশের সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নিরাপত্তায় তাদের সরকারি বাসভবনে আনসার সদস্য নিয়োগ দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
এদিকে, দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারের পর ভোরেই জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তাকে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বুধবার (২রা সেপ্টেম্বর) রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয়। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার ভোরে হাকিমপুর উপজেলার কালীগঞ্জ থেকে স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।