মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবে চীনের ভেটো, অভ্যুত্থান ‘অপরিহার্য’ ছিলো দাবি সেনাপ্রধানের
নিউজ ডেস্ক
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে চীন। গত ১লা ফেব্রুয়ারি সোমবার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের একদিনের মাথায় ২রা ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হয় নিরাপত্তা পরিষদ। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে এই আলোচনা শুরু হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, চীন সমর্থন না দেওয়ায় যৌথ বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদ। ভেটো ক্ষমতা থাকায় এ ধরনের যে কোনও প্রস্তাব বা বিবৃতি আটকে দিতে পারে দেশটি।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ক্ষমতাসীন দল-এনএলডি নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ রাজনীতিকদের গ্রেফতারের পর সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর সেখানে আগামী এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। অভ্যুত্থানের পর একটি নতুন সুপ্রিম কাউন্সিল গঠন করেছেন মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তারা, যে কাউন্সিলের অধীনস্থ হয়ে থাকবে মন্ত্রিসভা। গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় মঙ্গলবার এক জরুরি বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু চীনের বিরোধিতার কারণে যৌথ বিবৃতিতে দিতে ব্যর্থ হয় জাতিসংঘ।
এদিকে, দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ‘অপরিহার্য’ ছিল বলে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিং অং হ্লাং দাবি করেছেন। গত মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ কথা বললেন তিনি। দেশটির সেনাবাহিনীর ফেসবুক পাতায় সেনাপ্রধানের যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ‘বহুবার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। সে কারণেই আমরা এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হলাম’।
গত বছর নভেম্বরের মিয়ানমারে কথিত নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে সু চির সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা টানাপোড়েন চলছিল। ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংসদের অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। সোমবার মিয়ানমারে হঠাৎ দেশের ক্ষমতা দখলে নেয় সেনা। অং সান সু চি এবং এনএলডির বহু নেতাকে আটক করে তারা।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৫ বছর বন্দিদশা কাটিয়ে ২০১৫ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দেশের নেত্রী নির্বাচিত হন সু চি। কিন্তু দেশের পশ্চিমে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং গণহত্যার অভিযোগে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক মহলে সু চির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। তবে দেশীয় রাজনীতিতে আগের মতোই জনপ্রিয়তা ছিল তার।