জার্মানিতে বন্যায় মৃত্যু ১শ’ ছাড়িয়েছে, বেলজিয়ামে ২২
নিউজ ডেস্ক
ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে জার্মানিসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে। জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ঝড়, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১শ’ ছাড়িয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া ও রাইনল্যান্ড-পালাটিনেট রাজ্যের বাসিন্দা। এছাড়া বন্যায় প্রতিবেশী দেশ বেলজিয়ামে ২২ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, জার্মানিতে বন্যায় নিমেষেই মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে কয়েকটি শহর। যাতে নিখোঁজ হাজারের বেশি মানুষ। ধারণা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে।
গত বুধবার সারা দিন ও বৃহস্পতিবার রাতজুড়ে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে রাইন ও মোজেল নদীর শাখা পাহাড়ি নদীগুলোর দুই কূল উপচে যায়। খরস্রোতা নদীর পানি ছোট ছোট শহরগুলোতে ঢুকে পড়ে। বাসিন্দারা কিছু বোঝার আগেই নদীগুলোর পানি রাস্তা ও ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে। ফলে পাণহানির ঘটনাগুলো ঘটে।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে আগে থেকেই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সব ধরনের নৌযান চলাচল।
বন্যার কারণে পশ্চিম জার্মানির দুই লক্ষাধিক বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিঘ্ন ঘটছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহেও। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে যানবাহন চলাচলও ব্যাপকভাবে বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানা গেছে।
জার্মানিতে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে ১৫ হাজার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও জরুরিসেবা কর্মী। এছাড়া বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে হেলিকপ্টার। রাস্তাঘাট থেকে গাছ এবং ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্যাঙ্ক।
নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আকস্মিক বন্যায় এখনও হতাহতের সংখ্যা ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে এ বন্যায় বহু বাসিন্দা তাদের সমস্ত কিছু হারিয়েছেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বৈঠককালে নিহতদের প্রতি গভীল সমবেদনা জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল। দ্রুতগতিত উদ্ধার তৎপরতা চালানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে বেলজিয়ামের বন্যার কিছু ছবি। যাতে দেখা যাচ্ছে ভেসে যাচ্ছে মানুষের ঘর-বাড়ি। ক্ষতিগুস্ত অঞ্চলগুলোতে লুটপাটের ঝুঁকির কথা বিবেচনায় জারি করা হয়েছে কারফিউ।
এদিকে গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে বেলজিয়ামের বন্যার কিছু ছবি। যাতে দেখা যাচ্ছে ভেসে যাচ্ছে মানুষের ঘর-বাড়ি। যাতে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের বেশি মানুষের। দশ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বেলজিয়ামের উদ্ধারকর্মীরা বলছে, হঠাৎ বন্যা আসায় অপ্রস্তুত ছিল মানুষজন। তিনজন বয়স্ক মানুষকে নিয়ে যখন একটি নৌকা আসছিল, ঝড়ের কবলে পড়লে তা ডুবে যায়। তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগুস্ত অঞ্চলগুলোতে লুটপাটের ঝুঁকির কথা বিবেচনায় জারি করা হয়েছে কারফিউ।
লুক্সেমবুর্গের অবস্থাও ভয়াবহ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাভিয়ের বেটেল জানান, বন্যায় তাদের দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়িঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কবল থেকে রক্ষা পায়নি ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডসও। তবে তাদের অবস্থা জার্মানির মতো অতটা ভয়াবহ হয়নি।