রাঙামাটিতে সেনা অভিযানে ক্যাপ্টেন গাজী হত্যা মামলার আসামী ইউপিডিএফ (প্রসীত) সন্ত্রাসী আটক
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ারচরে অভিযান পরিচালনা করে ক্যাপ্টেন গাজী হত্যা মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী ইউনাইটেট পিপলস ডেমোক্রেটিকস ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-প্রসীত) এর কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক, চাদা কালেক্টর, ও ব্লাক প্যান্থার প্লাটুনের সক্রিয় সদস্য জ্ঞানময় চাকমাকে (৫২) একটি দেশীয় সর্ট গান, একটি মেগাফোন, তিনটি মোবাইল, জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সহ আটক করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
নিরাপত্তাবাহিনী সূত্র জানায়, গোপন গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৩টার দিকে রাঙ্গামাটি রিজিয়নের ঘাগড়া আর্মি ক্যাম্প কর্তৃক বিশেষ অপারেশন পরিচালনা করে নানিয়ারচরের হাজাছড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। অপারেশন পরিচালনার সময় তার সাথে থাকা ৩-৪ জন সশস্ত্র দেহরক্ষী সেনাবাহিনীর উপস্থিতি পেয়ে পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, আটককৃত ব্যাক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নাম জ্ঞানময় চাকমা (৫২), কিন্তু সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে তিনি প্রগতি চাকমা/কানুনগো এবং দলীয় সংগঠনগুলোর কাছে পরিত্রাণ/জিদং/গম্ভীর নামে পরিচিত। তার স্থায়ী ঠিকানা উত্তর হাতিমারা, বুড়িঘাট, নানিয়ারচর, রাঙ্গামাটি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রগতি চাকমা আনুমানিক ১৬-১৭ বছর বয়সে তৎকালীন সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন শান্তি বাহিনীতে যোগদান করেন। কিন্তু ২রা ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির আলোকে শান্তি বাহিনী আত্মসমর্পন করলেও সে আত্মসমর্পন না করে কিছুদিন আত্মগোপনে থেকে পুনরায় জেএসএস এর সশস্ত্র কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়।
পরবর্তীতে ২০০৩ সালে জানুয়ারি মাসে ঘিলাছড়ি এলাকায় সাব-পোষ্ট পরিচালক হিসেবে ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র দলে যোগদান করেন। ঘিলাছড়ি এলাকায় সাব-পোষ্ট পরিচালক এবং প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে থাকাকালীন অবস্থায় ২০০৬ সালে ক্যাপ্টেন নুরুল গাজী হত্যায় সরাসরি নেতৃত্ব দেন। উক্ত ঘটনায় নানীয়ারচর থানায় একটি মামলা হয় (এফআইআর নম্বর ১ তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০০৬, জিআর নম্বর ৩০৪/৬, ধারা-৩০২, পেনাল কোড- ১৮৬০) যেখানে উক্ত ব্যক্তি ৬ নম্বর চার্জশীটভূক্ত আসামী হিসেবে অভিযুক্ত হন। এছাড়াও তিনি রাঙ্গামাটি এর লংগদু থানায় (এফআইআর নম্বর-৪, তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৮, জিআর নম্বর ৩৫৫/১৮, ধারা ৩০২/৩৪, পেনাল কোড-১৮৬০) অন্য একটি মামলায়ও অভিযুক্ত হন।
২০০৬ থেকে তিনি বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপরহরণ ও হত্যার মতো বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। সে খুবই সাহসী, ধুর্ত, নিষ্ঠুর ও হিংস প্রকৃতির বলে এলাকয় পরিচিত, যা তাকে বিভিন্ন সন্তাসী ও চাঁদাবাজি কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়তা করেছে। ২০০৬ সাল থেকে অদ্যাবধি তিনি পলাতক থেকে উক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
নিরাপত্তাবাহিনী জানায়, প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একইদিন দুপুরে জ্ঞানময় চাকমাকে সম্পূর্ণ মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ্য অবস্থায় নানিয়ারচর থানায় হস্তান্তর করা হয়।