ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে আফগানিস্তান
নিউজ ডেস্ক
ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে আফগানিস্তান। দেশটিতে তীব্র খাদ্য সঙ্কটে রয়েছে ৮০ লাখ মানুষ। আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিবিসির সাংবাদিক জন সিমসন।
৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আফগানিস্তানের নানা খবর সংগ্রহ করছেন বিবিসির সাংবাদিক জন সিমসন। গতবছরের আগস্টে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখলের পর আবারো দেশটিতে খবর সন্ধানে নেমেছেন তিনি। তার নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের তথ্য।
আফগানিস্তানের জনসংখ্যার পুরোটাই দারিদ্রের শিকার। এরমধ্যে অর্ধেকেরই নেই একবেলা খাবারের যোগান। জন সিমসনের মতে ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান।
সাত জনের জন্য তিনটি রুটি যোগাড় করতে পেরেছি। এতে বাচ্চারা অন্তত খেতে পাবে। আমি আর আমার স্ত্রী না খেয়েই কাজের সন্ধানে বের হতে হবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পক্ষ থেকে জানানো হয়ছে, আফগানিস্তানের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাকে শুধু ভয়াবহ শব্দ দিয়ে বর্ণনা করা সম্ভব না। দেশটিতে প্রায় ৫০ লাখ শিশুও গর্ভবতী নারী পুষ্টিহীনতার দ্বারপ্রাান্তে আছে। একবেলা খাবার যোগাড় করাই তাদের জন্য কষ্টকর।
কয়েক দশকের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির ওপর প্রকৃতিও যেন রুষ্ঠ। অর্থসংকটের সাথে যোগ দিয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহ শীত। তিব্র ঠাণ্ডা থেকে বাঁচতে নেই প্রয়োজনীয় জ্বালানি। সাত বছরের ছোট্ট এই মেয়েটি ঘর উষ্ণ রাখতে পোড়াচ্ছে কাপড়।
তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই অর্থসঙ্কটে ছিল আফগানিস্তান। দেশটির ৭৫ শতাংশ খরচই আসতো বিদেশী ত্রাণ সহযোগিতা থেকে। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।
অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পারিশ্রমিক। কাজের অভাবে পথে বসেছেন লাখ লাখ আফগান। অভাবের তাড়নায় ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিচ্ছে অসংখ্য আফগান শিশু।
চলমান সঙ্কট থেকে আফগানিস্তানকে বাঁচাতে তালেবান সরকারকে অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির উপ অর্থমন্ত্রী নাজির কামিরি। বলেন, লাখ লাখ আফগানের কথা চিন্তা করলে, এগিয়ে আসতে হবে, রাজনৈতিক নেতাদের মত পিঠ বাঁচিয়ে চলার সুযোগ নেই। এদিকে, বিদেশী নিষেধাজ্ঞায় সাধারণ মানুষ আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তালেবান।