রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা- ইউএনএইচসিআর চায় ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার - Southeast Asia Journal

রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা- ইউএনএইচসিআর চায় ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক চাহিদা মেটাতে চলতি বছর ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। গত মঙ্গলবার সংস্থাটির সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় উন্নয়ন সহযোগীদের বৈঠকে এই সহায়তা চাওয়া হয়। একই দিন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ২৬ মিলিয়ন ডলারের নতুন মানবিক সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করেন। তাঁদের অনেকেই সামরিক দমনপীড়ন থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসেন। এর পর থেকে বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় সম্প্রদায়গুলো সাহায্য সংস্থার সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে আশ্রিতদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে।

ইউএনএইচসিআর বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের জন্য মানবিক কর্মকাণ্ডের যৌথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশি মিলিয়ে মোট ১৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবে মোট ১১৬টি সংস্থা, যার প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশি। পরিকল্পনাটির লক্ষ্য হলো– কক্সবাজার ও নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রিত ৯ লাখ ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাঁদের আশ্রয় দেওয়া ৪ লাখ ৯৫ হাজার বাংলাদেশিকে খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি, সুরক্ষা পরিষেবা, শিক্ষা, জীবিকার সুযোগ ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাউ বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা নারী-শিশুসহ প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার প্রতিটি দিন কাটে অনিশ্চয়তায়। বেঁচে থাকার জন্য তাঁরা প্রায় সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। সংকট বর্তমানে দীর্ঘায়িত হয়ে পড়লেও, শরণার্থীদের চাহিদাগুলো পূরণ করা জরুরি। তাঁদের ৭৫ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু; যারা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও শোষণের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে। ক্যাম্পে অর্ধেকেরও বেশি শরণার্থীর বয়স ১৮ বছরের নিচে এবং তাদের ভবিষ্যৎ স্থবির।

ইউএনএইচসিআর বলেছে, অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এরই মধ্যে ক্যাম্পের সব রোহিঙ্গার জীবন রক্ষাকারী খাদ্য সহায়তা কমাতে বাধ্য হয়েছে। মানবিক সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরও ৪৫ শতাংশ রোহিঙ্গা পরিবার সুষম খাবার পাচ্ছে না, আর অপুষ্টির হারও ব্যাপক। খাদ্যের বরাদ্দ কমানোর ফলে সামনে আরও অপুষ্টি, স্বাস্থ্য সমস্যা, পড়ালেখা থেকে শিশুদের ঝরে পড়া, বাল্যবিয়ের ঘটনা, শিশুশ্রম ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা দেখা যেতে পারে। এ কারণে জীবন রক্ষাকারী ও জীবন ধারণকারী সহায়তাগুলো চালু রাখতে আর্থিক সহায়তা জারি রাখা খুবই জরুরি।

যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা দেওয়া ২৬ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা পাবেন বাংলাদেশসহ এশিয়ার এই অঞ্চলের অন্যত্র বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এ নিয়ে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের দেওয়া মার্কিন সহায়তার মোট পরিমাণ ২১০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।