সীমান্ত সম্মেলন: বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়

নিউজ ডেস্ক
ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ে ৫৩তম সীমান্ত সম্মেলন।
চার দিনব্যাপী ৫৩তম সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক বৈঠক ভারতের নয়াদিল্লির বিএসএফ চাওলা ক্যাম্পে আজ রবিবার (১১ জুন) শুরু হয়েছে। বৈঠক চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। এতে বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে।
আলোচনায় আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্যাম্পের সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে ভারতীয় টেলিকম নেটওয়ার্কের বিস্তার রোধ, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন এবং পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা ও সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো, আহত করা ও আটক করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ দ্রব্যের চোরাচালান, আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করে অবৈধ অনুপ্রবেশ, বিশেষ করে ভারত সীমান্ত দিয়ে জোর করে বাস্তচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে অনুমোদনহীন উন্নয়নমূলক অবকাঠামো নির্মাণ এবং বন্ধ থাকা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ নিষ্পত্তি, আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে প্রবাহিত সীমান্তবর্তী খালের বর্জ্য পানি অপসারণে উপযুক্ত পানি শোধনাগার স্থাপন, জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় উন্মুক্তকরণের বিষয়েও আলোচনা চলমান রয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। প্রতিনিধি দলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করছেন।
অপর দিকে বিএসএফের মহাপরিচালক ড. সুজয় লাল থাওসেন, আইপিএসের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। ভারতীয় প্রতিনিধি দলে বিএসএফ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, ফ্রন্টিয়ার আইজিরা এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সীমান্ত সম্মেলন উপলক্ষে বিজিবি সীমান্ত পরিবার কল্যাণ সমিতির (সিপকস) প্রধান পৃষ্ঠপোষক মনোয়ারা বেগমসহ সিপকসের প্রতিনিধি দল বিএসএফ ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভানেত্রী ড. অজিতা থাওসেন ও তাদের সংগঠনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়সহ আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
আগামী ১৪ জুন সীমান্ত সম্মেলনের ‘যৌথ আলোচনার দলিল’ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। সম্মেলন শেষে একই দিন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল দেশে ফিরবে।