আড়াই মাস পর সীমান্তে নিহত যুবকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ

নিউজ ডেস্ক
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে। নিহতের ২ মাস ১৮ দিন পর মরদেহ ফেরত দিল ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
গত ২২ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে সীমান্তের ৮৬৮ নম্বর প্রধান ও ৩ নম্বর উপপিলারের কাছে ওই যুবকের মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগতবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল।
নিহত যুবকের নাম ইউছুফ। তিনি জগতবেড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেছেরডাঙ্গা এলাকায় শাহ জামালের ছেলে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, ‘উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি-বিএসএফ), ভারতের একজন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক ইউছুফের মরদেহ তাঁর বাবার কাছে তুলে দেওয়া হয়।’
ইউছুফের পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সীমান্তে নিহতের মরদেহ ফেরত চেয়ে ইউছুফের বাবা শাহ জামাল ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নে আবেদন করেন। বিজিবি উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মরদেহ ফেরতের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ফেরত দেওয়ার কথা জানায় বিএসএফ। সেই অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টায় ইউছুফের লাশ ফেরত দেওয়া হয়।
বিজিবি ও স্থানীয়রা বলছে, গত ৪ জুন দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে পাটগ্রাম ইউনিয়নের শেষ ও জগতবেড় ইউনিয়নের শুরু ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন ইউছুফ। সীমান্তের ৮৫৭ নম্বর প্রধান পিলারের ১৩ নম্বর উপপিলারের ভারতের সরকারপাড়া ও বাংলাদেশের কালীরহাট এলাকা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়-বাংলাদেশি ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল গরু পারাপারের চেষ্টা করতে থাকে। এ সময় ভারতীয় কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ১৬৯ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মীররাপা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ইউছুফ আলী পেটে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব রহমান বলেন, ‘ইউছুফের লাশ হস্তান্তরের সময় ভারতের বিএসএফ, মেখলিগঞ্জ থানা-পুলিশ, ওই দেশের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। বাংলাদেশের বিজিবি, পুলিশ, জগতবেড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নিহতের বাবা শাহ জামাল ও ছোট ভাই উপস্থিত ছিলেন। লাশ বুঝে নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ (৬১ বিজিবি) এর উপ অধিনায়ক মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, ‘ভারতের পুলিশ, বিএসএফ, অন্যান্য কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশের পুলিশ, বিজিবি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং নিহত ব্যক্তির স্বজনদের উপস্থিতিতে লাশ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এনওসি (অনাপত্তিপত্র) ছাড়া লাশ দিতে চায়নি। আমরা বলেছি, পূর্বে এনওসি ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ কারণে লাশ হস্তান্তরে সময় নেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।’