সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ঢুকছে চিনি
নিউজ ডেস্ক
সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো চোরাচালানের অন্যতম ‘নিরাপদ’ রুট। জেলার শ-খানেক স্থান দিয়ে অবৈধভাবে দেশে ঢোকে নানা চোরাই পণ্য। এসব দেখেও না দেখার ভান করেন সীমানা পাহারায় নিয়জিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অনেক সদস্য। এ নিয়ে গত ৩ আগস্ট ‘সিলেট সীমান্তে ম্যানেজ করে চোরাচালন’ শিরোনামে সমকালে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পর কিছুদিন চোরাকারবার বন্ধ ছিল। ১৫ দিন ধরে আবারও সেই অপকর্ম চলছে। তবে এবার পাল্টেছে কৌশল; বৃষ্টি এবং ডোবানালায় পানি বাড়ায় কমানো হয়েছে টহল। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে অবৈধভাবে নানা পণ্য আদান-প্রদানকারীরা। এতে দেদারসে আসছে চিনি, কসমেটিকস ও মাদক।
শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে নানা পণ্য এনে দেশের বাজারে অধিক লাভে বিক্রির লোভে সিলেট সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ‘ম্যানেজ’ করে এ কারবার চালায়। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে জনগণ। অবৈধভাবে আনায় যাচাই করার সুযোগ থাকে না এসব পণ্যের গুনগত মানের। কিন্তু দুর্মূল্যের বাজারে সুলভে পাওয়ায় চোরাই পণ্যগুলোতেই বেশি আকর্ষণ থাকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের।
জানা গেছে, গত সোমবার রাতে সীমান্তের প্রতাপপুর এলাকা থেকে ১৮ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ আটক করা হয় ইসমাইল মিয়া নামের এক চোরাকারবারিকে। একই দিন সীমান্ত থেকে নগরীতে প্রবেশ করার সময় আম্বরখানা থেকে ১৪০ বস্তা চোরাই চিনি উদ্ধার ও দুটি পিকআপ জব্দ করে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে এসব ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়া মাঝেমধ্যেই ঢুকছে মাদক, গরু-মহিষসহ নানা চোরাই পণ্য। এর অধিকাংশই থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওর এলাকার বাসিন্দা লিটন মিয়া জানান, ডিবির হাওর ও ঘিলারতৈল এলাকা দিয়ে রাতে ভারতীয় পণ্য আনা হয়। সম্প্রতি চিনি উদ্ধারের পর দুই পক্ষের মধ্য সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। তবে স্থানীয় বিজিবি সদস্যদের ম্যানেজ করেই এসব চোরাচালান হয়। কারবারিরা পুলিশ ও বিজিবির কিছু অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তাকে নিয়মিত কমিশন দেয়। এ কারণে সীমান্ত অতিক্রম করার জন্য নানা ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ বলেন, যখনই আদের কাছে চোরাকারবারিদের বিষয়ে তথ্য আসে, তখনই অভিযান চালানো হয়। নগরীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে পুলিশের নজরদারি থাকে। কাউকে সন্দেহ হলেই তল্লাশি করা হয়।
বিজিবি সিলেটের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সেলিম হাসান জানান, সীমান্ত এলাকায় সতর্ক অবস্থায় আছে বিজিবি। চোরাচালান রোধে নানা কৌশলে কাজ করছেন সদস্যরা। তবে বৃষ্টি ও পানি বাড়ায় অনেক সময় টহল দেওয়া যায় না। সে সুযোগে মাঝেমধ্যে কেউ অবৈধভাবে ভারতীয় পণ্য নিয়ে আসতে পারে।