তেঁতুলিয়ায় বিজিবির সঙ্গে পাথর শ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত ১২

নিউজ ডেস্ক
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সীমান্তবর্তী নদী মহানন্দায় পাথর উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও স্থানীয় পাথর শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভাদ্রুবাড়ি এলাকায় মহানন্দা নদীতে পাথর তুলতে গেলে বাঁধা দেয় বিজিবি। পরে দুপুরে নদী থেকে পাথর নিয়ে আসার সময় বিজিবি পাথর বোঝাই তিনটি ট্রলি আটক করলে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শনিবার সকাল থেকে রণচন্ডী বাজারের ভাদ্রুবাড়ি এলাকায় টহলরত ছিলেন বিজিবির সদস্যরা। বেলা ১১টার দিকে মহানন্দা নদী থেকে বালি ও পাথর বোঝাই ৩টি ট্রলি আটক করে বিজিবি। এতে বিজিবির সঙ্গে শ্রমিকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ঘটে।
খবর পেয়ে তেঁতুলিয়ার ইউএনও ফজলে রাব্বি, উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকী ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মীমাংসার জন্য বসেন। এ সময় আবার পঞ্চগড় থেকে দুটি পিকআপে বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে আরও সংঘর্ষ হয়। বিজিবির লাঠিচার্জে ১২ জন আহত হন। তাদেরকে তেঁতুলিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- ভাদ্রুবাড়ি এলাকার আমিনুর (২৮), সবিরন (৭০), ইমারন (৭০), মালতি (৩৫), আকলিমা (৪০), আতুল (৪০), ছালেমা (৭০), জোসনা, আঞ্জুনা (৩০), সালেকা (৫২) ও সরকারপাড়া এলাকার রাসেল (৩২)।
বিজিবির উপর আক্রমণ করার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে বিজিবি। আটককৃতরা হলেন- উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাদ্রুবাড়ি এলাকার ট্রাক্টর চালক সোলেমান আলী (৩০), একই এলাকার পাথর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম (২৪), রণচন্ডী এলাকার ট্রাক্টর চালক অমিত হাসান (২৩) ও পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার ট্রাক্টর চালক শিমুল হাসান (২৮)।
আহতদের কয়েকজন বলেন, মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলন করতে গেলে বাঁধা দেয় বিজিবি। দুপুরে কয়েক গাড়ি বিজিবি এসে আমাদের মারধর শুরু করেন। এ সময় তারা লোকজনকে গুলি করার ভয় দেখায়।
এ ঘটনাটি নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলা চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বী, তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী, সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ করিম সিদ্দিকীসহ পাথর শ্রমিকরা। বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানান তারা।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল যুবায়েদ হাসান বলেন, সীমানা অতিক্রম করে একটি চক্র পাথর উত্তোলন করতে গেলে বিজিবি বাঁধা দেয়। এ সময় তারা আমাদের ৬/৭ জন্য বিজিবি সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এর ফাঁকে সীমান্ত থেকে ট্রাক্টরগুলো সরিয়ে নেয় তারা। পরে আমাদের সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় ৪ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। লাঠিচার্জের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিজিবি। বিজিবির পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।