সেনাবাহিনী ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ৫৫ পদাতিক ডিভিশন
 
                 
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফুটবল প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যশোর সেনানিবাসের ৫৫ পদাতিক ডিভিশন। ১২০ মিনিটের খেলা শেষে শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জয় পায় তারা। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ এ খেলা দেখে উচ্ছ্বসিত দর্শকরা।
সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ ১৬ টি ফরমেশন দল নিয়ে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গ্রুপ পর্ব, কোয়ার্টার ফাইনাল সেমিফাইনালের গণ্ডি পেরিয়ে ফাইনালে অবতীর্ণ হয় যশোর সেনানিবাসের ৫৫ পদাতিক ডিভিশন এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসের ১৯ পদাতিক ডিভিশন।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় খেলার শুরুতেই রক্ষণাত্মক মেজাজে খেলা শুরু করে ৫৫ পদাতিক ডিভিশন। তবে পিছিয়ে ছিল না ১৯ পদাতিক ডিভিশনের খেলোয়াড়রা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠে খেলা। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোনো পক্ষেই গোলপোস্টে বল দিতে পারেনি। সে কারণে অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিটে গড়ায় খেলা। এ সময়ও উভয় পক্ষের খেলোয়াড়রা বেশ কয়েকটি গোলের প্রচেষ্টা চালালেও গোলরক্ষকদের নৈপুণ্যে তা ব্যর্থ হয়।
অতিরিক্ত সময়েও ফলাফল না আসায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখান থেকে ৩-২ গোলে জয় পায় ৫৫ পদাতিক ডিভিশন। এ জয়ে উচ্ছ্বসিত বিজয়ী দলের খেলোয়াড়রা। পাশাপাশি পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো খেলা উপহার দিতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রানার্সআপ দলও।
৫৫ পদাতিক ডিভিশন ফুটবল টিমের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন সোহানুর বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দল ঐক্যবদ্ধভাবে খেলেছে। যার ফলস্বরুপ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি এসেছে আমাদের ঘরে। আজকের ম্যাচটিতে অনেক প্রেসার নিয়ে খেলতে হয়েছে। যে কারণে নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময়েও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। তবে সবশেষ টাইব্রেকারে গোলকিপারের নৈপুণ্যে আমরা বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছি।’

১৯ পদাতিক ডিভিশন ফুটবল টিমের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন লাবিব বলেন, প্রতিযোগিতার শুরু থেকেই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতপূর্ণ ম্যাচ খেলে ফাইনালে আসি। আজকে খেলোয়াড়রা বিজয় ছিনিয়ে নিতে সর্বোপরি চেষ্টা করেছে। ব্যর্থ হলেও ভালো খেলে দর্শকদের আনন্দ দিতে পারায় আমরা খুশি।
টান টান উত্তেজনাপূর্ণ এ খেলা উপভোগ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত দর্শকরা। সাবিনা আক্তার নামে এক নারী দর্শক বলেন, অনেকদিন পর স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসাথে খেলা দেখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
সালমা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমরা স্কুলের কয়েক বান্ধবী মিলে খেলা দেখতে এসেছি। খুব সুন্দর খেলা হচ্ছে। তবে কেউ গোল না পাওয়ায় ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছিলাম।’
শাহ আলম নামে এক সৈনিক বলেন, একটি গোলের জন্য আমরা তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সেই গোল আমরা দেখতে পারিনি। ট্রাইবেকার বিজয় নিশ্চিত হওয়ায় আমরা খুব খুশি। দর্শকে খুশি ভাগ করে নিতে গ্যালারি ভেঙে মাঠে চলে যায়। বুঝতেই পারছেন এই খেলা আমাদেরকে কত আনন্দ দিয়েছে।
রংপুর ডিভিশন থেকে খেলায় অংশ নিতে আসা সৈনিক আব্দুস সোবহান বলেন, আমার চাকরি জীবনে ফুটবল প্রতিযোগিতার এমন সুন্দর আয়োজন আগে কখনো দেখিনি। এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করলে সেনা সদস্যদের মধ্য থেকেও ভালো ভালো খেলোয়াড় উঠে আসতে পারে।
এদিকে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ধরনের প্রতিযোগিতাপূর্ণ খেলা সৈনিকদের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মনোবল ও ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। আমাদের চাকরিতে ঐক্য-মনোবলের কোনো বিকল্প নেই। আজকের খেলায় আমরা যেভাবে নিজেদের ঐক্যের পরিচয় দিয়েছি এটা ধরে রাখতে হবে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয় এ ফুটবল প্রতিযোগিতার সমাপনীতে সেনাবাহিনী প্রধান চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এছাড়া একজন নবীন ও একজন প্রবীণ সেরা খেলোয়াড়কে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ফরমেশনের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দসহ যশোর এলাকার সকল অফিসার, জেসিও এবং অন্যান্য পদবীর সৈনিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
