হামলার আতঙ্কে বাইরে যাচ্ছেন না রুমা-থানচির মানুষ - Southeast Asia Journal

হামলার আতঙ্কে বাইরে যাচ্ছেন না রুমা-থানচির মানুষ

হামলার আতঙ্কে বাইরে যাচ্ছেন না রুমা-থানচির মানুষ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুট ও হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দারা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এরই মধ্যে নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক পরিবারের নারী ও শিশুদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্য জায়গায়। বেশিরভাগ দোকান বন্ধ থাকায় ধস নেমেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আজ রোববার সকালে বান্দরবানে যাচ্ছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করায় আগামী ঈদে পর্যটক সমাগম নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।

এদিকে বান্দরবানের ব্যাংক ডাকাতি ও সশস্ত্র হামলার পর রাজধানীর ব্যাংকগুলোতেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়ও নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ।

ব্যাংক নিরাপত্তা নিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে অতিরিক্ত আইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ব্যাংক ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা পরিদর্শন করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি থাকলে তা পূরণে কাজ করছে পুলিশ।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সিসি ক্যামেরা কাজ করছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ব্যাংকগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তা বাড়াতেও অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

গেল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বান্দরবানের রুমায় ব্যাংক লুটের ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্যামেরাগুলো ছিল নষ্ট। আর বিদ্যুৎ না থাকায় পাওয়া যায়নি ব্যাংকের ভেতরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজও।

এ ভবনটির সামনে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরাটি নিয়ন্ত্রণ করা হয় উপজেলা পরিষদ থেকে। তবে অজানা কারণে সেটি সক্রিয় নয়। সিসিটিভি ছিল ব্যাংকের সামনেও। সেটিও ছিল নষ্ট। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের ভেতরের ক্যামেরা সচল থাকলেও বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ ছিল সেসব ডিভাইস।

শনিবার ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার সময় এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক লুটের ঘটনায় গোয়েন্দা গাফিলতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র দুর্বৃত্ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১০ পুলিশ ও চার আনসার সদস্যকে নিরস্ত্র করে আটটি চাইনিজ অটোমেটিক রাইফেল, দুটি এসএমজি, চারটি শটগান ও ৪১৫ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে রুমা বাজার থেকে উদ্ধার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এ ঘটনার পরপরই থানচি থানা থেকে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই গোলাগুলি চলে।

স্থানীয়রা বলছেন, থানচি থানার পাশে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে তা থানচি বাজারের কাছে চলে আসে। এ সময় সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময় হয়। পুলিশ জানিয়েছে, থানায় হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে তারা প্রায় ৫০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে।

এর রেশ কাটতে না কাটতেই মধ্যরাতে আলীকদমের ২৬ মাইল ডিম পাহাড় এলাকায় যৌথবাহিনীর চেক পোস্টে হামলা হয়।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।