শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে চীনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা!!
 
                 
নিউজ ডেস্কঃ
দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন সীমান্তের জাতিবাদীরা পরস্পরের জন্য টনিকের মতো ভূমিকা রাখছে এ মুহূর্তে।
কাশ্মীর নিয়ে হতবিহ্বলতা না-কাটতেই শ্রী লঙ্কায় তামিল টাইগারদের দমনের অন্যতম কারিগর গোটাবায়া রাজাপাকসাকে প্রেসিডেন্টপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে আজ দেশটির বিরোধী দল ‘পিপলস্ ফ্রন্ট’। এ বছরের শেষে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে।
গোটাবায়া হলেন মাহিন্দা রাজাপাকসার ভাই। তামিলদের চূড়ান্ত দমনাভিযানের সময় মাহিন্দা রাজাপাকসা ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং গোটাবায়া ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব। আর সরথ ফনেসেকা ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান। তামিলদের ‘ইলম’-এর স্বপ্ন গুড়িয়ে দেয়ার ‘নায়ক’ বিবেচনা করা হয় এই তিনজনকে।
গৃহযুদ্ধের শেষলগ্নে ২০০৫ থেকে ২০০৯ এর মাঝে গোটাবায়ার বিরুদ্ধে প্রচুর বিচারবহির্ভূত খুনের অভিযোগ ছিল। যে হতভাগ্যদের মধ্যে অনেক ভিন্নমতালম্বী সাংবাদিকও ছিলেন। এলটিটিই গোটাবায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও তুলে থাকে। ২০০৬-এ ‘টাইগার’দের এক আত্মঘাতি হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি।
রাজাপাকসা ডাইনেস্টি সংখ্যাগুরু সিংহলিদের মাঝে বিশেষ জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ভিক্ষুরা এই পরিবারকে জাতীয় রাজনীতিতে সমর্থন করে থাকে। গোটাবায়া দেশটির আরও সামরিকায়নের পক্ষে। ফলে দেশটির সামরিক আমলাতন্ত্রও এই পরিবারের দৃঢ় পৃষ্ঠপোষক। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা গোটাবায়ার জন্য সুসময় হিসেবে কাজ করবে। সবমিলে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গোটাবায়ার বিজয়ের সম্ভাবনা বেশি এবং তাঁর স্বপক্ষে গণচীনের বিশেষ সমর্থন রয়েছে। আজকের ঘটনার পর কেউ কেউ এটাও বলছেন যে, শ্রী লংকার নির্বাচনে চীন তার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলো!!
গোটাবায়ার সম্ভাব্য বিজয়– সেখানে মুসলমানদের সাম্প্রতিক বিপন্নাবস্থাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে। উগ্র ভিক্ষুরা একে তাদের বিজয় হিসেবে দেখবে– যারা রাজাপাকসাদের মিত্র হিসেবে কাজ করছে বিভিন্ন পরিসরে।
ভারতের জন্যও শ্রী লঙ্কার রাজনৈতিক এই ‘অগ্রগতি’ একটা চ্যালেঞ্জ।
‘চীনা প্রার্থী’কে মোকাবেলায় তাদের এখন একজন ‘যোগ্য প্রার্থী’ খুঁজে পেতে হবে। তাদের ভরসা হলো রানিল বিক্রমাসিংয়ের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)। এই দল থেকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রাণাসিংয়ে প্রেমাদাসার ছেলে সাজিথ প্রেমাদাসার প্রার্থিতার সম্ভাবনাই বেশি। রাণাসিংয়ে টাইগারদের হামলায় ১৯৯৩ সালে মারা গিয়েছিলেন। তবে এখন সামগ্রিক বাস্তবতায় ‘জাফনা-তামিল’ এবং ‘মুসলমান-তামিল’দের ইউএনপি’র প্রার্থীকে সমর্থন দিতে হবে– তিনি যেই হন। যদিও গোটাবায়ার বিপরীতে বিজয়ী হওয়া ইউএনপি’র জন্য কঠিন হবে। দেশটির সিংহলিরা এমুহূর্তে উত্তেজক এক জাতীয়তাবাদী আবেগে রয়েছে।
এদিকে, ভাই প্রেসিডেন্ট হলে ২০২০-এ অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দা রাজপাকসার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ সুগম হতে পারে। আর পরিস্থিতি এইরূপ পথে এগুলোতে থাকলে দেশটিতে তামিলদের জন্য বাড়তি স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার বিষয়টি অধিক অধরা হয়ে যাবে।
