চীন সীমান্তের একাংশে সেনা প্রত্যাহার মিয়ানমারের
 
                 
নিউজ ডেস্ক
চীন সীমান্ত নিকটবর্তী শান রাজ্যের কিছু অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে মিয়ানমার। নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছেন জান্তা প্রধান। তার এই ঘোষণার একদিন আগে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) অঞ্চলটিতে সেনাবাহিনীকে হটিয়ে দেওয়ার দাবি করেছিল। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘শান রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সেনাসদস্যদের পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। মানুষের নিরাপত্তার জন্য তাদের অবস্থান পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষ জুন মাস থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়।
জান্তা প্রধান বলেছেন, ‘কেবল শানে নয়, পুরো দেশেই শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সরকার সচেষ্ট আছে।’
তার এই বক্তব্যের কিছুদিন আগে, ৩ আগস্ট এমএনডিএএ একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর তারা উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় লাসিও শহরের সামরিক ঘাটি দখলে নিয়েছে। এই ঘটনা ছিল জান্তা বাহিনীর জন্য বড় আঘাত।
বিদ্রোহীদের এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল জো মিন তুন। তিনি বলেন, ৩ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেষবারের মতো যোগাযোগ হয়। এরপর থেকে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।‘
তিনি আরও জানান, ‘বিদ্রোহীরা কয়েকজন কর্মকর্তাকে বন্দি করেছে। বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে আমরা এর সত্যতা যাচাই করেছি।‘
জান্তা ও স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছে, ঘাঁটির দখল ঘিরে গত কয়েকদিনের এই সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছেন।
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়ার পর হতেই তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত অবস্থায় আছে।
২০২১ সালে অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। তখন থেকে জান্তা ও তার বিরোধীদের মধ্যে নতুনভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়।
মিয়ানমারের অন্যতম মিত্র চীন হচ্ছে জান্তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহকারী। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জান্তা বিরোধীদের কাছেও অস্ত্র বিক্রি করে চীন।
কোনও দেশের নাম উচ্চারণ না করে মিন অং হ্লাইং তার বক্তব্যে ‘বৈদেশিক উৎস’ থেকে বিরোধীদের অস্ত্র পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া, তাদের আর্থিক ও সামরিক সহায়তার উৎস খুঁজে বের করা দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
