আসন্ন দুর্গাপূজায় সীমান্তে কঠোর অবস্থানে থাকবে বিজিবি-বিএসএফ

আসন্ন দুর্গাপূজায় সীমান্তে কঠোর অবস্থানে থাকবে বিজিবি-বিএসএফ

আসন্ন দুর্গাপূজায় সীমান্তে কঠোর অবস্থানে থাকবে বিজিবি-বিএসএফ
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

দুর্গাপূজাকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তে আরও কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সদস্যরা। সীমান্তে বাড়তি টহলের পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে জনবলও। পূজার দিনগুলোতে মণ্ডপের আশেপাশে নিয়মিত টহলের ব্যবস্থাও রেখেছে বিজিবি। সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ সদস্যরা অন্যান্য বছরের চেয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে সম্প্রতি একটি বৈঠকে জানিয়েছে বিজিবিকে।

সীমান্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আগের বছরগুলোতে দুর্গোৎসবকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তে বাড়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা। প্রতিমা দেখার অজুহাতে ভারতীয়রা বাংলাদেশে আর বাংলাদেশিরা ভারতে প্রবেশ করে থাকেন। এতে দুই দেশের নিরাপত্তা বিঘ্ন হলেও ধর্মীয় কারণে কিছুটা ছাড় দেওয়া হতো। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এ বছর দুর্গোৎসবকে ঘিরে কোনো রকম ছাড় দিতে চায় না বিজিবি। এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকায় নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে বিজিবি সদস্যরা।

এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি বিজিবি ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় ৩৪ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধীনে ১১টি, ৫৩ ব্যাটালিয়নের অধীনে ৯টি ও ১৬ ব্যাটালিয়নের অধীনে ১৪টি মণ্ডপ রয়েছে। সব মণ্ডপেই পূজা উৎসবমূখর করতে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে বিজিবি। বিভিন্ন মন্দিরকে দেওয়া হচ্ছে অনুদানও।

সনাতন ধর্মালম্বীরা বলছেন, সারাদেশে বিচ্ছিন্ন অসাম্প্রদায়িক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা কিছুটা ভয় রয়েছে। তবে উৎসবে যেন কোনো বাধা-বিপত্তি না আসে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শিবগঞ্জের বালিয়াদিঘী সর্বজনীন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক হরেন সাহা বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিটা খুবই ভালো। মুসলিম ভাইয়েরাও আমাদের পূজাকে ঘিরে নানান রকম সহযোগিতা করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আশা করছি।’

শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজামুল হক রানা বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় হিন্দু-মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েই বাস করে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে কোথাও কোন ভয় নেয়, আশঙ্কা নেই। আমরা সবাই মিলে সহযোগিতা করে শান্তিপূর্ণ দুর্গোৎসব উদযাপন করব।’

৫৯ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গোৎসব উপলক্ষে এরইমধ্যে সীমান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে জনবলও বাড়ানো হয়েছে সীমান্ত চৌকিগুলোতে। সীমান্ত পাহারার পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তবে এখন পর্যন্ত সীমান্তবর্তী মণ্ডপগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনার কোনো আশঙ্কা নেই। তারপরও সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিভিন্ন এলাকায় হিন্দু-মুসলিমদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।’

৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আশরারুল হক বলেন, ‘২০ সেপ্টেম্বর থেকেই সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আগে যেখানে ৬ জন বিজিবি সদস্য টহল দিত, সেখানে এখন ১০ জন দিচ্ছে। পঞ্চমীর পর থেকে মণ্ডপে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বিজিবি সদস্যরা।’

মেজর আশরারুল হক আরও বলেন, ‘বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির বৈঠক হয়েছে দুর্গোৎসবকে ঘিরে সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে। তারাও অন্যান্য সময়ের চেয়ে সীমান্তে কঠোর ভূমিকা রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। বিএসএফ সদস্যরা বলেছেন, তারাও কড়াকড়ি পজিশনে আছে দুর্গাপূজাকে ঘিরে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এ বছর কোনোভাবেই যেন না হয় সে জন্য।’

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।