রাষ্ট্রপতি হতে চান মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং
 
                 
নিউজ ডেস্ক
২০২০ সালে মিয়ানমারে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের পর দেশটির রাষ্ট্রপতি হওয়ার মনোবাসনা থেকে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনসংযোগ করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং। মিয়ানমার হতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নির্মূলে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখা এই সেনাপ্রধান বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হলেও মিয়ানমারে তাকে কেউ অবমূল্যায়ন করবেন না। কারণ, দেশটির রাজনীতিতে রাজনীতিকদের জায়গা খুবই সীমিত। তারপরেও তিনি শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি হতে জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং-এর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আবশ্যক নয়। দেশটিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে হলে সরাসরি ভোট নয়, নিম্নকক্ষের নির্বাচিত সদস্য, উচ্চকক্ষের নির্বাচিত সদস্য এবং সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমর্থন প্রয়োজন পড়ে। জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং সেই সমর্থন কিভাবে সংগ্রহ করেন তাই এখন দেখার বিষয়।
অনেক সমালোচক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মনে করেন সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল পদটি রক্ষা করাই সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং-এর প্রধান লক্ষ্য। অতীতে সংবাদমাধ্যমে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তিনি দেশের শীর্ষপদে (রাষ্ট্রপতি) আসীন হতে চান কিনা। সেনাপ্রধান উত্তরে কখনও ‘না’ বলেননি। দেশটির কমান্ডার-ইন-চিফ তিনিই। এখন তার বয়স ৬৩ বছর। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তার অবসর নেওয়ার কথা ছিল। মিয়ানমারে সরকারি কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর।
সেনা সমর্থিত দল ইউএসডিপি এবং তার সহযোগী দলগুলি যদি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তবে রাষ্ট্রপতি হয়ে যেতে পারবেন মিন অং হ্লাইয়াং। তবে এটি অসম্ভব বলেই ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের ইউনিয়ন সংহতি ও উন্নয়ন পার্টি (ইউএসডিপি) সাবেক সামরিক সরকার দ্বারা গঠিত একটি দল। এখনও দলটি সেনাবাহিনীর মূল মিত্র। তবে সংসদে তাদের আসন মাত্র ৬ শতাংশ। সু চির নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন এনএলডি ৫৯ শতাংশ আসন এবং ২৫ শতাংশ সেনা প্রতিনিধিদের হাতে রয়েছে। অন্যান্য দলগুলোর আসন ৯ শতাংশের বেশি।
অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) সরকার সেই সময় ভেবেছিল স্বেচ্ছায় অবসর নেবেন সেনাপ্রধান। কিন্তু সেই প্রত্যাশা দূরে ঠেলে সেনাপ্রধান তার পদের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। কমান্ডার-ইন-চিফের মেয়াদ বাড়াতে হলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতির অনুমোদন দরকার পড়ে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রথমদিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এর ফলে সেনাপ্রধান ও এনএলডি সরকারের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
সম্প্রতি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং-এর অনেকগুলো কাজ বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। মান্দালয় ও ইয়াঙ্গুনসহ কয়েকটি বড় শহরে খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষ ও তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন এবং অনুদান দিয়েছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং ২০১০ সালে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেবার পর তার কার্যক্রম এবং সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ভিন্নরকম।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী দমনের নামে রাখাইন রাজ্যে হামলা চালানোর পরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ কেউ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিধনের অভিযোগ আনেন। এ অভিযানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তার বিচারের জন্য অনেকে চাপ দিয়েছেন
