ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ, পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না ভারতীয় প্লেন

নিউজ ডেস্ক
ভারতশাসিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে হওয়া সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। সীমান্ত বন্ধ, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ আরও বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি। তার প্রতিক্রিয়ায় এবার পাল্টা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান।
এখন থেকে পাকিস্তানের আকাশসীমায় কোনো ভারতীয় উড়োজাহাজ প্রবেশ করতে পারবে না। অর্থাৎ, ভারতের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) ভারতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের জন্য নির্ধারিত পানির প্রবাহ ভারতে যদি একতরফাভাবে বন্ধ বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তবে সেটিকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি) জরুরি বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তে সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও দায়িত্ব লঙ্ঘনের শামিল।
এই পানি পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জীবনরেখা উল্লেখ করে এনএসসি জানায়, এই অধিকার রক্ষায় তারা সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। যদি পাকিস্তানের অধিকারের পানি আটকে রাখা বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচিত হবে।’
জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে নেওয়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
– ওয়াঘা সীমান্ত ভারতের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে
– সার্ক ভিসা ছাড়ের আওতায় থাকা ভারতীয় নাগরিকদের ছাড় অবিলম্বে বাতিল
– পাকিস্তানে অবস্থানরত সব ভারতীয়কে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ
– ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা
– ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সংখ্যা ৩০ জনে নামিয়ে আনা হচ্ছে
– সব ধরনের বাণিজ্যিক লেনদেন স্থগিত, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে যেসব লেনদেন হতো তাও বন্ধ
এনএসসি জানিয়েছে, ভারতের আগ্রাসী আচরণের জবাবে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। তাদের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো ধরনের আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য তৈরি।
এছাড়া ভারতের সঙ্গে থাকা সিমলা চুক্তিও বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে ভারত এ যুদ্ধে জড়িত হয়। ওই সময় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে লড়াই হয়। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাধ্যমে শেষ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তান সিমলা শান্তি চুক্তি করে।
এই চুক্তির লক্ষ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি কাঠামো তৈরি, কাশ্মির সংকটের সমাধান এবং ভবিষ্যতে যে কোনও ধরনের দ্বন্দ্ব শান্তিপূর্ণ উপায়ে মেটানো। এছাড়া চুক্তিতে যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি এবং যোগাযোগের লাইন পুনর্স্থাপনের কথা বলা হয়েছিল।
ভারতের সিন্ধু নদের পানি চুক্তি বাতিলেরও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলেছে, নয়াদিল্লি সিন্ধু নদের পানি প্রবাহ ঠেকানোর চেষ্টা করলে পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করে এর জবাব দেওয়া হবে।
জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান অসিম মুনিরসহ অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।