আওয়ামীলীগ নেতার অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে আসন্ন কাউন্সিল নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে খাগড়াছড়িতে ফের সংবাদ সম্মেলন - Southeast Asia Journal

আওয়ামীলীগ নেতার অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে আসন্ন কাউন্সিল নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে খাগড়াছড়িতে ফের সংবাদ সম্মেলন

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

গত ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা সদরের একটি রেষ্টুরেন্টে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগের একাংশের করা সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্য ভিত্তিহীন দাবি করে, তারা আসন্ন জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলকে বিতর্কিত ও সম্মেলন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করে খাগড়াছড়িতে ফের সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা আওয়ামীলীগের অপর একটি অংশ। ২২ নভেম্বর শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে জেলার সকল উপজেলার সভাপতি-সম্পাদকের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ২৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সমীর দত্ত চাকমা স্বার্থান্বেষী একটি মহল ও আঞ্চলিক সংগঠনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে মিথ্যাচার করছেন। এসময় দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রমে জড়িত উল্লেখ করে অবিলম্বে তাকে দলীয় পদ থেকে বহিস্কারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় জেলার সকল নেতা-কর্মী মিলে তার বিষয় যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে বলেও লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, গত ৩০শে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন ও গত ১৮ই মার্চের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বিপক্ষে কাজ করেছেন, এমনকি তিনি ৩০শে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিজের ভোট পর্যন্ত প্রদান করেন নি। এমতাবস্থায় বর্ত
মান জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে নিয়ে তিনি মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন। গত ২১ নভেম্বর সমীর দত্ত চাকমা কর্তৃক সংবাদ সম্মেলনে“ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কাউন্সিলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নিজের লোকদের পদ-পদবী দেওয়া হয়েছে” এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা কর্তৃক দেয়া সবকটি কমিটিই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু কমিটি। এসব কমিটি নিয়ে কথা বলার জন্য সমীর দত্ত চাকমার কোন এখতিয়ার নেই বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

জেলার সকল উপজেলার সভাপতি-সম্পাদকের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আশুতোষ চাকমা, এম এ জব্বার সহ বিভিন্ন উপজেলার সভাপতি-সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গত ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা সদরের এফএনএফ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা অভিযোগ করে বলেন, “জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একপেশে ও অগণতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে বিশৃঙ্খল কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছে। যার মাধ্যমে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা অসাম্প্রদায়িক দল আওয়ামীলীগে সাম্প্রদায়িক আধিপত্য বিস্তার করছেন।” তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে দলের জন্য নিবেদিত ও কষ্ট করা নেতাদের বঞ্চিত করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্যসহ দলের গঠনতন্ত্র বহির্ভূত ভাবে সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়ে লুকোচুরি এবং গোপন ষড়যন্ত্রের ফলে ক্ষোভ আর শঙ্কাও নিয়ে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, যার জন্য একমাত্র দায়ী সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার একনায়কতান্ত্রিক রাজনীতি।” অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা বলেন, সম্প্রতি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এমপির অনুসারীরাই সভাপতি/সম্পাদক পদ পেয়েছেন, যার ফলে জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে দলে ত্যাগী নেতা থাকা স্বত্বেও সুবিধাবাদীরাই আবারো জেলা আওয়ামীলীগকে কুক্ষিগত করার সুযোগ পাবেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি কর্তৃক অগণতান্ত্রিক ভাবে গঠিত নয় উপজেলা আওয়ামীলীগ ও পৌর আওয়ামীলীগ নিয়ে জেলা কাউন্সিলের জন্য তৈরী করা তালিকা প্রত্যাখ্যান আগামী ২৪ নভেম্বর সুষ্ঠু ভাবে খাগড়াছড়ি আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের লক্ষে সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৭ বছর পর আগামী ২৪ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটি জানিয়েছে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় আওয়ামীলীগের নেতারা। এদিকে দীর্ঘ ৭ বছর পর কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে জেলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারনা।