বান্দরবানে পাহাড়ী গ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসীদের দেয়া আগুনে সাত ঘর পুড়ে ছাই, চার উপজাতি সংগঠনের নিন্দা - Southeast Asia Journal

বান্দরবানে পাহাড়ী গ্রামে উপজাতি সন্ত্রাসীদের দেয়া আগুনে সাত ঘর পুড়ে ছাই, চার উপজাতি সংগঠনের নিন্দা

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

সম্প্রতি রাঙ্গামাটির রাজস্থলীতে আঞ্চলিক উপজাতি সশস্ত্র সংগঠন ও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস’র দুই সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যকার গোলাগুলিতে তিন সন্ত্রাসী নিহত ও একই উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের লংগদু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত তিন বাঙালি শ্রমিককে উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহতের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বান্দরবানে পাহাড়ী একটি গ্রামের সাতটি বসত ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। গত ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার পর বান্দরবান সদর উপজেলা কুহালং ইউনিয়নের কাট্টলি চাকমা পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে চাকমা পাড়ায় একদল সশস্ত্র উপজাতি লোক ঢুকে হঠাৎ কয়েকটি ঘর ভাঙচুর করে এবং পরক্ষনে বেশ কয়েকটি বসতঘরে আগুন দেয়। আগুন ছড়িয়ে পড়লে উপজাতি সন্ত্রাসীরা উক্ত স্থান ত্যাগ করে। তাৎক্ষনিকভাবে আগুন ছড়িয়ে গিয়ে সাতটি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল আলম চৌধুরী জানান, ঘটনা জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জেনেছে। এ বিষয়ে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে উক্ত ঘটনার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এমএলপিকে দায়ী করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের চার উপজাতি সংগঠন। ২২ নভেম্বর শুক্রবার গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা কর্তৃক গনমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সংগঠনটির নেতারা। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সভাপতি সচিব চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরুপা চাকমা সংবাদ মাধ্যমে উক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তথাকথিত এমএলপির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কাট্টলী পাড়ায় এসে ত্রাস সৃষ্টি করে এবং অসহায় দরিদ্র গ্রামবাসীদের ৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বাড়ির সব জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হামলায় যাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয় তারা হলেন, ধারজ চন্দ্র কার্বারী, মোহিনী রঞ্জন চাকমা, জ্ঞান লাল চাকমা, সুপংকর চাকমা, বলি চাকমা, রংঙে চাকমা (প্রাক্তন ভূটান পাড়া কার্বারী) ও রহিন চাকমা। বক্তারা, অবিলম্বে তথাকথিত এমএলপি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচার এবং তাদের হাতে নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ নভেম্বর সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজস্থলী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে গাইন্দ্যা ইউ‌নিয়নের বালুমুড়া এলাকায় জেএসএস’র দু্ইপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। খবর পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপই সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে সেখানে তল্লাশী চালিয়ে গোলাগুলিতে নিহত তিন সন্ত্রাসীর মরদেহ শনাক্ত করে নিরাপত্তাবাহিনী। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। এরপর চাহিদামতো চাঁদা না পেয়ে গত ২০ নভেম্বর বুধবার একই উপজেলার লংগদু পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত তিন বাঙালি শ্রমিককে বেধড়ক পিটিয়ে জখম ও তাদের কাছে থাকা নগদ টাকাসহ মোবাইল ফোন নিয়ে যায় উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।