বান্দরবানে বাজার চৌধুরী পদে আওয়ামী লীগ নেতার বহাল থাকা নিয়ে বিতর্ক, ছাত্রসমাজের হুঁশিয়ারি

বান্দরবানে বাজার চৌধুরী পদে আওয়ামী লীগ নেতার বহাল থাকা নিয়ে বিতর্ক, ছাত্রসমাজের হুঁশিয়ারি

বান্দরবানে বাজার চৌধুরী পদে দলীয় নেতার বহাল থাকা নিয়ে বিতর্ক, ছাত্রসমাজের হুঁশিয়ারি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন ‘বাজার ফান্ড’-এর নিয়ন্ত্রক পদ ‘বাজার চৌধুরী’-তে আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বহাল থাকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের রদবদল হলেও এখনো এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রোয়াংছড়ির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হ্লা থোয়াই হ্রী মারমা।

স্থানীয় ছাত্র ও তরুণদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনিক সংস্কার অভিযানের প্রেক্ষাপটে এমন দলীয় পরিচয়সম্পন্ন একজন রাজনীতিকের বহাল থাকা সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক নীতিমালার পরিপন্থী। তাঁরা এই অবস্থানকে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন।

বান্দরবান জেলা পরিষদের আওতাধীন বাজার ফান্ড একটি অর্থনৈতিক ও ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। বাজার এলাকার জমি ইজারা, খাজনা আদায়, বিরোধ নিষ্পত্তিসহ নানা দায়িত্ব পালন করেন ‘বাজার চৌধুরী’। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার সময়কালে হ্লা থোয়াই হ্রী মারমা রাজনৈতিক পক্ষপাত এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে জমি বরাদ্দ দিয়েছেন, পুরনো ইজারাগুলো বাতিল করে বেনামে জমি হস্তান্তর করেছেন এবং কিছু প্রভাবশালী ইজারাদারের বকেয়া খাজনা রহস্যজনকভাবে মওকুফ করেছেন।

জেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নতুন পরিষদ দায়িত্ব নেওয়ার পরও হ্লা থোয়াই হ্রী মারমাকে সরানো যাচ্ছে না তার প্রভাবশালী বলয়ের কারণে। অভিযোগ আছে, তিনি নতুন পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে প্রভাবিত করেছেন।

বান্দরবান ছাত্র সমন্বয় পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক আসিফ ইকবাল বলেন, “একজন দলীয় নেতা কীভাবে এখনো প্রশাসনিক পদে বহাল থাকতে পারেন, আমরা সেটি বুঝে উঠতে পারছি না। পরিষদ আমাদের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু এখনো কিছু হয়নি। যদি দ্রুত তাঁকে অপসারণ না করা হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ রাজপথে নামবে।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাজার ফান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পরিষদ সদস্য মো. নাছির উদ্দীন বলেন, “বিষয়টি পরিষদের সভায় আলোচনা হয়েছে এবং চেয়ারম্যান মহোদয় অবগত আছেন। তবে বাজার চৌধুরী নিয়োগ ও অব্যাহতির বিষয়টি চেয়ারম্যানের এখতিয়ারভুক্ত।”

স্থানীয় প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাজার ফান্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমি ও অর্থ ব্যবস্থাপনাধীন একটি পদে রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডসম্পন্ন ব্যক্তির অবস্থান প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা এবং সুশাসনের জন্য হুমকি হতে পারে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এ ধরনের পদে নিয়োগে দলীয় পরিচয় নয়, যোগ্যতা ও নিরপেক্ষতাই হওয়া উচিত একমাত্র মানদণ্ড।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।