চাকমাদের ‘নারকো-টেররিস্ট’ অপবাদ থেকে মুক্ত করতে ভারতের চাকমা রাজনীতিবিদদের কাছে খোলা চিঠি
![]()
নিউজ ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী বসবাসরত চাকমা সম্প্রদায়ের একাধিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ভারতের চাকমা রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাঁরা সম্প্রতি চাকমা জনগোষ্ঠীর উপর আরোপিত ‘মাদক পাচারকারী ও নারকো-টেররিস্ট’ অপবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
গত ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের লুংলেই জেলায় আসাম রাইফেলস কর্তৃক ১০.৪৩ কোটি টাকার মাদক উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (PCJSS)-এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে চিঠিতে। এরপর থেকেই ভারতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় চাকমা জনগোষ্ঠীকে ‘নারকো-টেররিস্ট’ বা মাদকসংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রবাসী চাকমা নেতারা।
চিঠিতে বলা হয়, সন্তু লারমা ২৭ বছর ধরে কোনও নির্বাচন ছাড়াই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) পরিচালনা করে আসছেন এবং তাঁর সংগঠনের সঙ্গে ভারতবিরোধী কার্যকলাপ, অস্ত্র চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার সরাসরি সংযোগ রয়েছে বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যম তথ্য উপস্থাপন করেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিঠিতে স্বাক্ষরকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন—সুইজারল্যান্ড থেকে Swiss Jumma Association-এর প্রেসিডেন্ট সঞ্চয় চাকমা, কানাডা থেকে CHT Defence Force-এর প্রজ্ঞা তপস চাকমা, চীন থেকে Jumma Students Union-এর সাতু চাকমা এবং কোরিয়া থেকে Voice of Jumma Youth-এর সজিব চাকমা। তাঁরা সকলেই PCJSS ও সন্তু লারমার কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে চাকমা জনগোষ্ঠীকে এসব অপবাদ থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, PCJSS তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে মাদক পাচার, অস্ত্র আমদানি, বিদেশে মেয়েদের পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত। তারা বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারে ছড়িয়ে থাকা চাকমা জনগণের সরলতা ও আবেগকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের মতো কাজ করছে।
চিঠির মাধ্যমে প্রবাসী চাকমা নেতারা ভারতের চাকমা নেতৃবৃন্দকে PCJSS ও সন্তু লারমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে, তাদের বর্জন করতে ও ভারত সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, “আমরা PCJSS বা সন্তু লারমা নই, আমরা চাকমা। আমাদের গোটা জাতিকে কলঙ্কিত হতে দেওয়া যায় না।”
চিঠিটি পাঠানো হয়েছে ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরামের চাকমা মন্ত্রী, বিধায়ক, MDC ও বিভিন্ন সংগঠনের মোট ২১ জন নেতার কাছে, যাঁদের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে—চাকমা জনগোষ্ঠীর মর্যাদা রক্ষায় এখনই কার্যকর অবস্থান গ্রহণের।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।