পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত, ভূমি বিরোধ সংক্রান্ত শুনানী ২৩ ডিসেম্বর!
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৭ নভেম্বর বুধবার সকাল ১১টার দিকে রাঙামাটি সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে কমিশনের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ার আল-হক ছাড়াও ভূমি কমিশনের সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রাষ, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা ও ভুমি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সাহাব উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল-হক বলেন, ভূমি বিরোধ সংক্রান্ত এ পর্যন্ত কমিশনের নিকট জমা হওয়া আবেদনগুলোর শুনানী আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, চুক্তির ২২ বছরেও পার্বত্যাঞ্চলের ভূমি জটিলতার সমস্যার সমাধান হয়নি। তবে, বৈঠকটি সন্তোজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন চাকমা সার্কেল চীফ ও কমিশনের সদস্য ব্যারিষ্টার দেবাশিষ রায়।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্যাঞ্চলের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে প্রথম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করে। ওই কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরী কার্যভার গ্রহণের আগেই মারা যান। এরপর ২০০০ সালের ৫ এপ্রিল পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আবদুল করিম কার্যভার গ্রহণের কিছুদিন পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেন। ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মাহমুদুর রহমান ২০০৭ সালে মারা যান। তবে তিনি কাজ শুরু করতে পারেননি। এরপর পুনর্গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী কাজ শুরু করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, আইন সংশোধন সরকারের বিষয়। সে জন্য কমিশন অকার্যকর থাকতে পারে না। বিদ্যমান আইন অনুযায়ীই কমিশন কাজ করবে। এরপর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জরিপের উদ্যোগ নেন। একই সঙ্গে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করেন। তখন প্রায় সাড়ে চার হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু আইন সংশোধন না করে বিরোধ নিষ্পত্তি কিংবা ভূমি জরিপের উদ্যোগ তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়ে ভেস্তে যায়। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই ওই কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়। প্রায় দুই বছর কমিশনের অস্তিত্ব ছিল না। ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হককে চেয়ারম্যান নিয়োগ করে সরকার কমিশন পুনর্গঠন করে। এই কমিশনের অন্য চার সদস্য হচ্ছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট সার্কেল প্রধান (যখন যে এলাকার ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ চলবে, তখন সেই সার্কেলের প্রধান বা রাজা সদস্য হিসেবে কাজে অংশ নেবেন), চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (যখন যে জেলার বিরোধ নিষ্পত্তির কাজ চলবে, তখন সেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সদস্য হিসেবে অংশ নেবেন)।