হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, ভারতের মহারাষ্ট্রে উত্তেজনা
![]()
নিউজ ডেস্ক
ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছে। যার শুরু হয় গত এপ্রিল মাসে। তখন মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা দেয়, রাজ্য পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও মারাঠির পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাও শেখানো হবে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। খবরে বলা হয়, সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মারাঠি ভাষা অধিকার রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
১৯৬৮ সালে চালু হওয়া এনইপি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়। সময়ে সময়ে এই নীতিতে সংশোধন আনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছর আগে এর সর্বশেষ সংস্করণ চালু করেন, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
রাজ্যটির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যে সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। এপ্রিল মাসে রাজ্যের থানে জেলায় দুই নারীকে মারাঠি বলতে না পারার কারণে হামলার শিকার হতে হয়। একই মাসে মুম্বাইয়ে এক নিরাপত্তাকর্মী মারাঠি না জানায় মারধরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া, গত সপ্তাহে মুম্বাইয়ের এক দোকানদারকে মারাঠি না বলায় মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার সিদ্ধান্তটি বাতিল করে এবং বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। তবে, এখানেই বিতর্কের অবসান হয়নি। আসন্ন স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় রাজনীতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
যদিও ভাষা বিতর্কটি সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করেছে, তবুও এটি দুই পুরনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রায় দুই দশক পর এক মঞ্চে নিয়ে এসেছে।
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধ ভুলে হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এবং তার চাচাতো ভাই মারাঠি জাতীয়তাবাদী দল এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরে একসঙ্গে একটি জনসভায় অংশ নেন। তারা হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভাষা ও পরিচয় ঘিরে এই ইস্যুটি আগামী নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে। তবে অনেকে বলছেন, ভাষাকেন্দ্রিক রাজনীতি দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী জনপ্রিয়তা ধরে রাখা কঠিন।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।