আসামে আদিবাসীদের অস্ত্র লাইসেন্সে ছাড়, আতঙ্কে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা

আসামে আদিবাসীদের অস্ত্র লাইসেন্সে ছাড়, আতঙ্কে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা

আসামে আদিবাসীদের অস্ত্র লাইসেন্সে ছাড়, আতঙ্কে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

ভারত সরকারের স্বীকৃত ‘আদিবাসী’ জনগোষ্ঠীদের অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে আসাম রাজ্য সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার (৬ আগস্ট) ঘোষণা দেন, সংবেদনশীল এলাকায় বসবাসকারী আদিবাসীরা এবার থেকে একটি নতুন পোর্টালের মাধ্যমে অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার এই ঘোষণার পর থেকেই আসামের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “অসমীয়া ভাষাভাষী জনগণ বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে এমনকি নিজেদের গ্রামেও হামলার হুমকির মুখোমুখি হচ্ছেন। তাদের আত্মরক্ষার জন্যই এই উদ্যোগ।”

উল্লেখ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্য বহুদিন ধরেই জাতিগত, ধর্মীয় ও ভাষাগত বিভাজনের কেন্দ্রে রয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার এই রাজ্যে ৩৫ শতাংশ মুসলিম, যাদের বেশিরভাগই বাংলা ভাষাভাষী। অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে অসমীয়া ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। রাজ্যটিতে বিগত কয়েক দশকে বহু সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত দাঙ্গা হয়েছে।

অস্ত্রের অনুমতি আদিবাসীদের জন্য, লক্ষ্য মুসলিমরা?

আসামের এই নতুন সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও দানা বেঁধেছে। বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা গৌরব গগৈ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “এই সিদ্ধান্তে রাজ্যে গ্যাং সহিংসতা, প্রতিশোধমূলক খুন বাড়বে। এটি সুশাসনের নামে এক ভয়ানক পশ্চাৎগামী পদক্ষেপ।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’দের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, বাস্তবে তার নিশানায় রয়েছে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা। একদিকে এনআরসি তালিকায় প্রায় ২০ লাখ নাগরিকের নাম বাদ, অন্যদিকে আদিবাসীদের অস্ত্রের লাইসেন্সে ছাড় — সবকিছু মিলে রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে।

প্রসঙ্গত, ভারত সরকার বহু আগে থেকেই নির্দিষ্ট কিছু জনগোষ্ঠীকে ‘আদিবাসী’ (Scheduled Tribes) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। আসামে এই তালিকায় রয়েছে বোড়ো, মিসিং, কার্বি, দিমাসা, তিওয়া, ওরাং, সাঁওতালসহ প্রায় ২৩টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীগুলোকেই অস্ত্র বহনের অনুমতির লক্ষ্যবস্তু হিসেবে দেখছে আসাম সরকার।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে অস্ত্রের অনুমতি দিয়ে আদিবাসীদের ‘সশস্ত্র’ করার পদক্ষেপটি আসলে একটি ভিন্নধর্মী জনসংখ্যাকে প্রান্তিক করার আরও একটি কৌশল বলে মনে করছেন সমালোচকরা।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।