পাকিস্তান থেকে আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো শুরু
![]()
নিউজ ডেস্ক
পাকিস্তানে আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো শুরু করেছে সরকার। রাজধানী ইসলামাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের বাসা থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি চাপের মুখে বাড়িওয়ালারা আফগান শরণার্থীদের ঘর থেকে বের করে দিচ্ছেন। আশ্রয়হীন কয়েকশ’ পরিবার বাধ্য হয়ে ইসলামাবাদের একটি পার্কে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। বৃষ্টি ও গরমের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
এমনই একজন ভুক্তভোগী সামিয়া, আফগানিস্তানের হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষ। কয়েক বছর ধরে পরিবারসহ ইসলামাবাদে বসবাস করছিলেন তিনি। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে সন্তান জন্ম দেওয়ার পরও গত শুক্রবার বাড়িওয়ালা তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়। নবজাতককে নিয়ে সামিয়া এখন খোলা আকাশের নিচে কাটাচ্ছেন দিন-রাত।
তার মতো আরও অনেকে একই পরিস্থিতির শিকার। নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা সাহেরা বানুও গত মাসে ভাড়া বাসা থেকে উচ্ছেদ হন। রয়টার্সকে তিনি বলেন, “সাত দিনের বাচ্চা নিয়ে এখানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি। ২২ দিন হলো খোলা আকাশের নিচে আছি। খাবার নেই, ডাক্তার নেই, আমার বাচ্চারাও অসুস্থ। এ অবস্থায় সন্তান জন্ম নিলে কী হবে জানি না।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসলামাবাদের ওই পার্কে অন্তত ২০০ আফগান পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। খোলা আকাশের নিচে চলছে রান্না, ঘুম, কাপড় শুকানোসহ নিত্যদিনের কাজ। কেউ কেউ সামান্য টাকা জোগাড় করে কেনা আলু বা লাউ ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। নারীরা মসজিদের টয়লেট ব্যবহার করছেন। পার্কের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরুর পর ১৯৮০-এর দশক থেকে চার দশক ধরে লাখো আফগান পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে প্রায় ১৪ লাখ নিবন্ধিত শরণার্থী প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (পিওআর) কার্ডধারী। তবে এসব কার্ডের মেয়াদ এ বছরের জুনে শেষ হয়ে যায় এবং সরকার তা নবায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়।
চলতি মাসের শুরুতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত শরণার্থীদের ২৫ দিনের ‘অনুগ্রহকালীন সময়’ দেয়, যা শেষ হবে ৩১ আগস্ট। যদিও সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে শেহবাজ শরিফের সরকার।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।