স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আসামে অরাজকতা আশঙ্কা, তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক
![]()
নিউজ ডেস্ক
আসামে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নির্দেশনা ঘিরে। গত ১ সেপ্টেম্বর জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে—আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আসা অমুসলিম অনিবন্ধিত অভিবাসীরা, যারা ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করেছে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই, তারা দেশটিতে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ পাবে।
এ সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে আসামের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। আসাম জাতীয় পরিষদ (AJP), কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি (AAP) ও সিপিআই(এম) একযোগে জানায়, এটি ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন এবং রাজ্যের জনগণের স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
২০১৯ সালের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন অনুযায়ী, হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পারসি ধর্মাবলম্বীরা যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করেছিল, তারা শরণার্থী মর্যাদা পেতে পারত। নতুন নির্দেশনায় এই সুবিধা আরও ১০ বছর বাড়ানো হলো, যা আসামে নতুন করে ব্যাপক অভিবাসনের শঙ্কা তৈরি করেছে।
AJP সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈ অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি আসামের স্বকীয়তা বিসর্জন দিচ্ছে। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের কাঁধে “৫৩ বছরের বিদেশি বোঝা” চাপিয়ে দিল। ইতোমধ্যে দলীয় কর্মীরা গুয়াহাটিতে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং বিজ্ঞপ্তির কপি পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের বিরোধীদলীয় নেতা দেবব্রত শইকিয়া সতর্ক করে বলেন, এ নির্দেশনার ফলে প্রায় পাঁচ লাখ অনুপ্রবেশকারী বৈধ নাগরিক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি একে আসাম চুক্তির প্রতি অপমান হিসেবে উল্লেখ করেন এবং অবিলম্বে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার অথবা আসামকে এর আওতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান।
আম আদমি পার্টির রাজ্য নেতা রাজীব শইকিয়া এ সিদ্ধান্তকে “স্বৈরাচারী” বলে আখ্যা দেন। সিপিআই(এম) একইভাবে তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি তোলে।
উল্লেখ্য, আসামে ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে ছয় বছরব্যাপী বিদেশি বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল, যার ফলেই আসাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে চূড়ান্ত সীমারেখা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল বিদেশি চিহ্নিত ও বহিষ্কারের জন্য। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, আর এই ইস্যুটি রাজনৈতিক বিতর্কে বড় ভূমিকা নেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আসামের রাজনীতি সবসময়েই অনুপ্রবেশ ইস্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত থাকে, আর সর্বশেষ নির্দেশনাটি এ বিতর্ককে আরও জোরালো করে তুলেছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।