দীঘিনালায় কাঠ ব্যবসায়ীদের ওপর ইউপিডিএফের (প্রসীত) হামলা, গুলি ও অগ্নি সংযোগ!

নিউজ ডেস্ক
চাঁদার দাবিতে এবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় মৌসুমী কাঠ ব্যবসায়ী, কাঠ বহনকারী ট্রাক্টর চালক ও পাহাড়ী-বাঙ্গালী শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের কর্মীরা। এসময় ট্রাক্টরে গুলি ও অগ্নি সংযোগও করেছে সন্ত্রাসীরা।
গত ১৮ ই জানুয়ারি শনিবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ এয়াকুব সওদাগর সহ বাবুছড়ার তিনজন কাঠ ব্যবসায়ীর মোট ১৩ গাড়ি কাঠ সংগ্রহের জন্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার ৭ নং বাঁশবাগান এলাকায় যায়। কিন্তু বাবুছড়ায় ফেরত আসার সময় অবৈধ চাঁদার দাবীতে ইউপিডিএফ (প্রসীত) এর সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায় তাদের উপর। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা চাঁদা না পেয়ে ট্রাক্টরটি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় ড্রাইভার আমির হোসেনের কাছে থাকা নগদ অর্থ এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় তারা। এ ঘটনায় সব মিলিয়ে গাড়ি ব্যতিত আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে আমির হোসেনের মত খেঁটে খাওয়া ড্রাইভার ও হেল্পাররা দৈব ক্রমে এলোপাথাড়ি গুলির মাঝেও প্রাণ নিয়ে ফিরে আসে।
খবর পেয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবসায়ী, ড্রাইভার, হেল্পারদের নিরাপদে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা দোষী ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র এই পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে বাঙ্গালী-পাহাড়ি উভয় জনগোষ্ঠীর মানুষই ছিল। এই হামলার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো ইউপিডিএফ।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বনবিভাগ তথা সরকারি সকল আইন মেনেই তারা কাঠের ব্যবসার সাথে জড়িত হয়েছেন। কিন্তু জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেবার কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে সামনে অন্ধকার দেখছেন তারা।
এদিকে বাঙ্গালী সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এই ঘটনায় কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তারা বলেছেন, ইউপিডিএফ এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে সামনের দিনগুলিতে তাদের কঠিন মূল্য দিতে হবে।
এছাড়া প্রসীত পন্থি ইউপিডিএফের অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনমনে আতংক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ এবং সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক সমাজের ধারণা, অবৈধ অস্ত্র এবং অবৈধ চাঁদা যে সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি তারা কখনোই সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পারে না। তারা সকল পর্যায়ে এই সন্ত্রাসী দলটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।