পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের যুদ্ধংদেহী রূপ, সেনাবাহিনীর দিকে ছোড়া হয় গুলি

পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের যুদ্ধংদেহী রূপ, সেনাবাহিনীর দিকে ছোড়া হয় গুলি

পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের যুদ্ধংদেহী রূপ, সেনাবাহিনীর দিকে ছোড়া হয় গুলি
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে আন্দোলনের সময় সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ ও জেএসএসের সদস্যদের। এ দলে অন্তত পাঁচজন ছিলেন, যাদের হাতে অস্ত্র ছিল।

সংঘর্ষের সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে এ দৃশ্য ধরা পড়ে। আমার দেশ-এর হাতে এসব ভিডিও এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, সন্ত্রাসীরা সরাসরি সেনা ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল।

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, সংঘর্ষের সময় পাহাড়িরা সক্রিয়ভাবে বাঙালিদের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে আগুন দিয়েছে। সন্ত্রাসী ও অরাজকতাকারীরা একযোগে আগুন ধরানো এবং সিএনজি অটোরিকশায় পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়। এতে পাহাড়ে আতঙ্ক আরো বেড়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সেনা উপস্থিতি না থাকলে আরো বড় ধ্বংসযজ্ঞ ঘটতে পারত।

আমার দেশ-এর হাতে আসা গত শনিবারের সংঘর্ষের ১০টি ভিডিও বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, খাগড়াছড়ির চেঙ্গী স্কয়ারের আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে পাঁচজনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ ৪০০ মিটার দূরে থাকা সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের দিকে গুলি ছুড়ছিল। সেনা সদস্যরা ওই সময় বাঙালি ও পাহাড়িদের সংঘর্ষ থামাতে কাজ করছিলেন।

ভারী অস্ত্র থেকে সেনা সদস্যদের দিকে গুলি ছোড়া এক সন্ত্রাসীর পরিচয় শনাক্ত করেছে আমার দেশ। তিনি হলেন সশস্ত্র গোষ্ঠী জেএসএসের সামরিক শাখার সদস্য শান্তি প্রিয় চাকমা। তবে তার ডাক নাম কামিয়াধন চাকমা। তিনি খাগড়াছড়ির ছোট পানছড়ির ঝাউপাড়া এলাকার শান্তি মনির চাকমার ছেলে।

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, বাঙালিদের বাড়িতে আগুন দিচ্ছে পাহাড়িরা। রামসুবাজারে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া হয় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায়ও। বাজার এলাকায় সংঘর্ষ থামাতে সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় পার্শ্ববর্তী একটি চারতলা ভবনের ছাদে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা ছিলেন অস্ত্র হাতে।

  • অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
  • ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
  • ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল  কন্টেন্টের দুনিয়ায়।

একটি ভিডিওতে একজন পাহাড়িকে বলতে শোনা যায়, রামসুবাজারে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওপরের দিকে গুলি ছুড়েছে। কিন্তু ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা সরাসরি পাহাড়িদের দিকে গুলি ছুড়েছে।

ওইদিনের ঘটনায় গুলিতে তিনজন পাহাড়ি মারা যান। তারা হলেন—সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি চেয়ারম্যানপাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়ন সাং চেং গুলিপাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) এবং রামেসু বাজার বটতলার তৈইচিং মারমা (২০)। এছাড়াও ওইদিন সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ ১৬ সদস্য এবং গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন আহত হন।

খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল আমার দেশকে বলেন, যাদের হাতে অস্ত্র দেখা গেছে, তাদের ধরতে অভিযান চলমান। এছাড়া যারা অরাজকতা করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

এ পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, সন্ত্রাসী ও অরাজকতাকারীদের শনাক্ত করতে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইউপিডিএফের সশস্ত্র গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত থেকে অস্ত্র এনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা শান্তিচুক্তির অপব্যবহার করে নতুন শক্তি সঞ্চয় করেছে। সীমান্ত এলাকায় নতুন সেনাক্যাম্প ছাড়া এ ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা রোধ করা সম্ভব নয়। সেনা ও পুলিশের সমন্বিত অভিযান না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের রক্তপাতের ঝুঁকি থেকে যাবে।

-আমার দেশ।