ত্রিপুরায় ২৪ ঘণ্টার বনধে সহিংসতা: আগুন, হামলা ও সংঘর্ষে আহত বহু
![]()
নিউজ ডেস্ক
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নাগরিক সমাজের আহ্বানে ২৪ ঘণ্টার বনধ সহিংস রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আগরতলা সহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে সরকারী কর্মকর্তা সহ বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
তিপ্রা মোথা দলের বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মার নেতৃত্বে ডাকা এই বনধের সমর্থকরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। আগরতলার প্রায় ৪৫টিরও বেশি স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভকারীরা সাধারণ মানুষকে কর্মস্থলে যেতে বাধা দেয়। খুমলুঙে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাওয়া এক যাত্রীকে আটকে অপমান করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
টেলিয়ামুড়া উপবিভাগের মুঙ্গিয়াকামি এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর মানিক সাহার নির্ধারিত জনসভাকে কেন্দ্র করে তীব্র সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, বনধ সমর্থকরা— যাদের বড় অংশই তিপ্রা মোথা কর্মী— বিজেপির প্রস্তুতিমূলক সভায় হামলা চালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, লাঠি, পাথর ও বাঁশ দিয়ে হামলা করে অন্তত ২৫–৩০ জনকে আহত করা হয়। আহতদের টেলিয়ামুড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আছেন বিজেপির মণ্ডল কমিটির অফিস সেক্রেটারি সুরেন্দ্র দেববর্মাও।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ধলাই জেলার সালেমা এলাকায় দোকানপাট বন্ধ না করায় বিক্ষোভকারীরা একাধিক দোকান ও বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছালে তাদের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়। এতে এসডিপিও সমুদ্র দেববর্মা এবং সালেমার বিডিও অভিজিত মজুমদার মাথায় আঘাত পান। স্থানীয় ব্যবসায়ী বিপ্লব দেব গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
ডিআইজি রাতি রঞ্জন দেবনাথ বিপুল সংখ্যক ট্রিপুরা স্টেট রাইফেলস নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ধলাই জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিবেক এইচ.বি., আইএএস, কামালপুর উপবিভাগে বিএনএসএস ১৬৩ ধারায় বিধিনিষেধ জারি করেছেন।
এতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে—
• চারজনের বেশি মানুষের সমাবেশ
• অস্ত্র, দাহ্য পদার্থ বা বিপজ্জনক সামগ্রী বহন
• উসকানিমূলক বক্তব্য, স্লোগান, লিফলেট বিতরণ
• বাড়ির ছাদ ব্যবহার করে পাথর নিক্ষেপ
• নিষিদ্ধ এলাকায় যান চলাচল
জরুরি সেবা, নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি দায়িত্ব পালনকারীরা এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত। আদেশটি ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহাল থাকবে।
ঘটনাপ্রবাহের পর রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকলেও প্রশাসন বলছে— পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।