বর্মাছড়িমুখ এলাকায় সেনা অভিযানে ৪ হাজার ঘনফুট অবৈধ কাঠ উদ্ধার: ইউপিডিএফ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার লক্ষীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়িমুখ বাজার সংলগ্ন দেওয়ানপাড়া এলাকা থেকে প্রায় ৪,০০০ ঘনফুট অবৈধ কাঠ উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। উদ্ধারকৃত কাঠের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর ২০২৫) সেনাবাহিনীর ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড ও গুইমারা রিজিয়ন এবং লক্ষীছড়ি জোনের যৌথ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত টহল অভিযানে এই কাঠ উদ্ধার করা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই বর্মাছড়ি-সংলগ্ন দুর্গম বনাঞ্চলে কাঠ পাচার, চাঁদাবাজি এবং সশস্ত্র তৎপরতা পরিচালনা করে আসছে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফের সদস্যরা। সম্প্রতি ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি বাড়ায় ইউপিডিএফ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে “সেখানে কোনো সশস্ত্র তৎপরতা নেই” বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, এলাকাটিতে নিয়মিত টহল ও অভিযান চালানোই ইউপিডিএফের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য “হুমকি” হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে, আজকের অবৈধ ভাবে পাচারকালে কাঠ উদ্ধারের সময় সেনা টহলের উপস্থিতি টের পেয়ে কাঠ পাচারকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। পরে উদ্ধারকৃত কাঠ বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
লক্ষীছড়ি জোনের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বর্মাছড়িমুখ এলাকায় সম্প্রতি ইউপিডিএফের সশ্ত্র গ্রুপগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে “সেনা উপস্থিতির নামে দমন-পীড়ন” অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। অথচ বাস্তবে এই এলাকায় সশস্ত্র সক্রিয়তা, চাঁদাবাজি, সাধারণ জনগণের ওপর ভয়-ভীতি ও অবৈধ কাঠ পাচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থনৈতিক লাভ করছে ইউপিডিএফ।
বিবৃতিতে বলা হয়, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানে বাধা দেওয়ার জন্য এবং নিজেদের অর্থনৈতিক উৎস রক্ষায় ইউপিডিএফ অপপ্রচারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

জোন কর্তৃপক্ষ জানায়, “জনগণের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং অবৈধ চোরাচালান প্রতিরোধে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বদা বদ্ধপরিকর। পার্বত্য চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাসিন্দা জানান, বনের কাঠ পরিবহন, পাহাড়ি গ্রামগুলোতে চাঁদা আদায় এবং চলাচলে ভয় দেখানোর মাধ্যমে ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটির সাধারণ মানুষকে নানা চাপে রাখছে। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এলাকা নিরাপদ হলে সাধারণ মানুষ শান্তিতে চলাফেরা করতে পারবে।”
প্রসঙ্গত, বর্মাছড়ি ও গুইমারা এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে সংঘাত, সড়ক অবরোধ, গুলিবর্ষণসহ উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যার পেছনেও ইউপিডিএফের সশস্ত্র নাশকতামূলক তৎপরতা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ রয়েছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।