বনবিভাগের কার্যালয়ে ইউপিডিএফের হামলা ও ভাঙচুর, ১৮ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
![]()
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার মাচালং বাজার এলাকায় অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের মাচালং রেঞ্জের সদর বিট অফিসে সংঘবদ্ধ হামলা, ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ থেকে ১৬০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেন মাচালং রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান। এজাহার অনুযায়ী, গতকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে সাজেক থানাধীন মাচালং বাজারস্থ বন বিভাগের সদর বিট অফিসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেন, ওইদিন সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে মাচালং সদর বিটের আওতাধীন এ্যাগোজ্জাছড়ি (১৪ কিলো) সংরক্ষিত বনের কম্পার্টমেন্ট নম্বর ৬১-এর ভেতরে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বন বিভাগের একটি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান শেষে দুপুরে তিনি বাঘাইহাটে অবস্থানকালে সংবাদ পান যে, উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে একদল লোক সংঘবদ্ধভাবে মাচালং সদর বিট অফিসে হামলা চালিয়েছে।
সাজেকে বনবিভাগের কার্যালয়ে ইউপিডিএফের হামলা-ভাঙচুর: বনরক্ষী আহত, ব্যর্থ অপহরণচেষ্টা
এজাহারে বলা হয়, বিটন চাকমা, প্রদীপ চাকমা (রনির বাপ), সুখী চাকমা ও বাবুধন চাকমার নেতৃত্বে আসামিরা দা, লাঠি-শোঠা, ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল হাতে মিছিল করে বন বিভাগের অফিসে প্রবেশ করে। তারা অফিসের গেট ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে টিনশেড ঘরের দরজা-জানালা, আসবাবপত্র ও বিভিন্ন সরকারি মালামাল ভাঙচুর করে এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র নষ্ট করে বলে অভিযোগ করা হয়।
এক পর্যায়ে হামলাকারীরা পাশের পাকা ভবনে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে ভবনের বারান্দার গ্রিল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় অফিসে থাকা স্টাফদের ব্যক্তিগত একটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। হামলার সময় অফিসে কর্মরত মো. আশরাফুল আলম ইট ও কাঁচের বোতলের আঘাতে গুরুতর আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাঘাইহাট জোন ও সাজেক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে আহত কর্মচারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এজাহারে মাচালং সদর বিট অফিসে সংঘটিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ছয় লাখ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদী আরও জানান, ঘটনার পর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ, ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে থানায় এসে এজাহার দাখিল করায় কিছুটা বিলম্ব হয়।
প্রসঙ্গত, সংরক্ষিত বন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সাজেক ও আশপাশের এলাকায় এর আগেও উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা ধর্মীয় উপাসনালয়ের আঁড়ালে পাহাড়ের রিজার্ভ ফরেস্ট সহ আশে-পাশের খাস ভূমি দখল করে নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।