আশিয়ানের ফাঁস হওয়া রোহিঙ্গা প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি
![]()
নিউজ ডেস্কঃ
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন আশিয়ানের ফাঁস হওয়া এক প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
চলমান গৃহযুদ্ধ, সেনা নিপীড়ন ও নাগরিকত্ব দেয়ার মত গুরুত্বপুর্ণ বিভিন্ন ইস্যুকে উপেক্ষা করে আগামী দু’বছরের মধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মিয়ানমার বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর তীব্র সমালোচনা জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরার মত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি।
আশিয়ানের ‘ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট টিম (ইর্যাট)’এর করা এ প্রতিবেদনটি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হবে বলে জানিয়েছে এএফপি। তারা জানায়, এ প্রতিবেদন থেকে এটি মূল্যায়ন করা যায়, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করে বিপথে পরিচালিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
গত ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক নৃশংস অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ঘটনার আগেও বিভিন্ন সময়ে আরো প্রায় সাড়ে তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল।
জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও দেশ ২০১৭ রাখাইনে পরিচালিত এ সেনা অভিযানকে গণহত্যা ও জাতিগত ভাবে নির্মূলের প্রচেষ্টা বলে অ্যাখায়িত করেছে। এ অভিযানে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বসত-বাড়িতে আগুন দেয়ার অসংখ্য প্রমাণও পেয়েছে জাতিসংঘ তাদের অনুসন্ধানে। তবে মিয়ানমার সরকার শুরু থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর আনা সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে একটি চুক্তি হলেও মিয়ানমার সরকারের অসহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অভাবে তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য রাখাইনকে নিরাপদ করাসহ তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া না মানার ফলে রোহিঙ্গারাও নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না।
একটি প্রতিবেদন মতে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে যা বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী মোট আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যার চেয়ে বেশ কম।
এছাড়া প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ না করে ‘মুসলিম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার সরকারের এ প্রচেষ্টাকে ‘মসৃণ’ ও ‘শৃংখলাবদ্ধ’ বলে প্রশংসা করা হয়েছে।