ভারত ছেড়ে স্বাধীনতা ঘোষনা, মনিপুরের প্রবাসী সরকার গঠন!
![]()
নিউজ ডেস্ক
মনিপুরের ভিন্নমতাবলম্বী রাজনীতিকরা গত ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার ভারত থেকে রাজ্যটির স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে ব্রিটেনে তারা একটি প্রবাসী সরকার গঠন করেছেন। কয়েক দশক ধরে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে আসছে মনিপুর রাজ্যের স্বাধীনতাকামীরা। লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে মনিপুর রাজ্য পরিষদের মুখ্যমন্ত্রী ইয়ামবেন বিরেন এবং মনিপুর রাজ্য পরিষদের বৈদেশিক সম্পর্ক ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী নরেংবাম সমরজিত স্বাধীনতা ঘোষণা ছাড়াও প্রবাসী সরকার গঠনের ঘোষণা দেন।
ইয়ামবেন বিরেন ও নরেংবাম সমরজিত বলেন, তাদের এ ঘোষণা রাজা লেইশেমবা সানাজাওবার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ‘প্রবাসী সরকার জাতিসংঘের স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আমরা এখানে এই আইনসম্মত (ডি জুরে) সরকার পরিচালনা করব…আজকে থেকে।’ এছাড়া সমরজিৎ বলেন, ‘জাতিসংঘের সদস্য হতে আমরা বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি চাইবো। আমরা মনে করি, অনেক দেশই আমাদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেবে।’ তারা আরো জানান, ভারতে থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তারা হয়তো গ্রেফতার হতে পারেন। এমনকি ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হত্যা করতে পারে।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে কিংবা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মুখ খোলেননি মনিপুরী রাজাও।
উল্লেখ্য, ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৪৯ সালে মনিপুরকে অঙ্গীভূত করে নেয় ভারত। কিন্তু এরপর থেকে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে আসছে মনিপুর রাজ্য। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কথিত ‘সেভেন সিস্টার্স’ গ্রুপের রাজ্যগুলোর একটি মনিপুর। মনিপুরের বাসিন্দা প্রায় ২৮ লাখ। তাদের প্রায় সবাই স্থানীয় মনিপুরী নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী।
প্রসঙ্গত, মণিপুর হল ভারতের উত্তর-পূর্ব ভারত একটি রাজ্য। মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল। এই রাজ্যের উত্তরে নাগাল্যান্ড, দক্ষিণে মিজোরাম, পশ্চিমে অসম ও পূর্বদিকে মায়ানমার। মনিপুরের আয়তন ২২, ৩২৭ বর্গকিলোমিটার। মৈতেই উপজাতির মানুষেরা প্রধানত রাজ্যের উপত্যকা অঞ্চলে বাস করে। এরাই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী (জনসংখ্যার ৬০%)। মৈতেইরা পাঁচটি সামাজিক গোষ্ঠীতে বিভক্ত – মৈতেই মারুপ (এরা মৈতেই সংস্কৃতি ও মৈতেই ধর্মে বিশ্বাস করে), মৈতেই খ্রিস্টান, মৈতেই গৌর চৈতন্য (মৈতেই ধর্ম ও হিন্দুধর্ম উভয়েই বিশ্বাস করে), মৈতেই ব্রাহ্মণ (স্থানীয় নাম “বামোন” ও মৈতেই মুসলমান (স্থানীয় নাম মিয়া মৈতেই বা পাঙ্গাল)। মৈতেই বা মণিপুরি ভাষা তাদের মাতৃভাষা এবং এই রাজ্যের প্রধান সংযোগরক্ষাকারী ভাষা (লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা)।