শান্তিচুক্তির ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উত্তোলিত টাকার ভাগ-ভাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে নিজ দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে জেএসএস (সন্তু) কালেক্টর নিহত - Southeast Asia Journal

শান্তিচুক্তির ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উত্তোলিত টাকার ভাগ-ভাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে নিজ দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে জেএসএস (সন্তু) কালেক্টর নিহত

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সন্তু লারমার নির্দেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে দলীয় কালেক্টরদের চাঁদা তোলার নির্দেশের পর এবার শান্তিচুক্তির বর্ষপূর্তির মাত্র একদিন আগে উত্তোলিত টাকার ভাগ-ভাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে নিজ দলীয় সন্ত্রাসীদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন জেএসএস (সন্তু)’র রাঙামাটি এলাকার চীফ কালেক্টর বিক্রম চাকমা। ১লা ডিসেম্বর রোববার দুপুরে রাঙামাটি সদর উপজেলাস্থ আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কের বড় আদম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিক্রম চাকমা ওরফে সুমন চাকমা রাঙামাটি শহরের রাঙ্গাপানি এলাকার বাসিন্দা। এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করা বিক্রম চাকমা জেলার কাউখালী ও ঘাগড়া এলাকায় চাঁদা আদায়ের কাজ করতো। সম্প্রতি জেএসএস’র রাঙামাটি জেলার চীফ কালেক্টর জ্ঞান শংকর চাকমা নিহত হওয়ার পর তার স্থানে দায়িত্ব পায় বিক্রম। বর্তমানে সে চীফ কালেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো।

রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, স্বগোত্রিয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতেই নিহত হয়েছে বিক্রম চাকমা। রোববার ভোর রাতের কোনো এক সময় তাকে গুলি করে হত্যা করে বড় আদমের অদূরে একটি দোকানের পেছনে লাশ ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়।

এর আগে, শান্তিচুক্তির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার লক্ষ্যে জেএসএস’র কেন্দ্রীয় দপ্তর হতে জেএসএস’র প্রত্যেকটি ইউনিটের চাঁদা আদায়কারীদের (কালেক্টর) কাছে পাঠানো একটি গোপন চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আর এতে ব্যাপক ভাবে পাহাড়ী-বাঙ্গালী উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যেই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ জেএসএস’র এমন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির বিষয়টিকে শান্তিচুক্তির সাথে বেঈমানী বলেও উল্লেখ করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া উক্ত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “ আগামী ২রা ডিসেম্বর শান্তি চুক্তির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার লক্ষ্যে সংগঠনের টাকার প্রয়োজন” এমতাবস্থায় বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজির মাধ্যমে উক্ত টাকা উত্তোলনের জন্য তাদের কালেক্টরদেরকে নির্দেশনা প্রদান করে সংগঠন থেকে। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, “কেউ যদি চাঁদা দিতে অস্বীকার করে তাহলে শক্তি প্রদর্শনের ও নির্দেশনা দেওয়া হয়।” পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর তথ্য প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমার স্বাক্ষরিত চিঠিতে দেখা যায়, “হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, পরিবহন ব্যবসায়ী, চাকরিজীবি, সাধারণ পর্যটক, এবং এলাকার সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলনের নির্দেশনা প্রদান করে।”

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরনের জন্য ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও তৎকালীন শান্তিবাহিনী ও বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র সাথে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়। কিন্তু প্রতিবছর ২রা ডিসেম্বর শান্তিচুক্তির বর্ষপূর্তিকে ঘিরে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস।