খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের গোপন আস্তানায় বিজিবির অভিযান, বিপুল অস্ত্র-সরঞ্জাম উদ্ধার
![]()
নিউজ ডেস্ক
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গার তাইন্দং ইউনিয়ের পংপাড়ায় প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ-এর একটি গোপন আস্তানায় বিশেষ অভিযান চালিয়েছে বিজিবির যামিনীপাড়া ব্যাটালিয়ন (২৩ বিজিবি)। আজ সোমবার মধ্যরাতে পরিচালিত এই অভিযানে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয় এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
অপারেশন উত্তরনের আওতায় পরিচালিত এই অভিযান নিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ২০ জুলাই গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনটি টহল দল ওই এলাকায় নজরদারি শুরু করে। এরপর আজ ২১ জুলাই মধ্যরাত আনুমানিক ২টা ৫০ মিনিটে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খালিদ ইবনে হোসেন এর নির্দেশনায় একটি পূর্ণাঙ্গ আভিযানিক দল পংপাড়া এলাকার একটি নির্জন জুমঘরে হানা দেয়। অভিযানে বিজিবি সদস্যরা ছয় রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং ইউপিডিএফ সদস্যদের পক্ষ থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে দুইটি দেশীয় রাইফেল, একটি ১২ বোর পিস্তল ও একটি ১২ বোর শটগান (উভয়ই ভারতের তৈরি), দুটি হাসুয়া, বিভিন্ন ক্যালিবারের ১৬ রাউন্ড গুলি এবং ৫০০ গ্রাম গানপাউডার উদ্ধার করা হয়।

এছাড়াও উদ্ধার করা হয় দুইটি ওয়াকিটকি সেট, দুইটি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আদলে তৈরি আট জোড়া কম্ব্যাট ইউনিফর্ম, একটি কম্ব্যাট ক্যাপ, দুটি জঙ্গল বুট, একটি বান্ডুলিয়ার, চার সেট সিভিল পোষাক, দুটি পতাকা, চাঁদা আদায়ের ২৯টি রশিদ বই, একটি এলআরপি টেন্ট, একটি হুক্কা, ১০ প্যাকেট বিড়ি/সিগারেট, রান্নার সরঞ্জাম এবং ব্যবহৃত কসমেটিকস।
বিজিবি জানিয়েছে, অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইউপিডিএফ এর সশস্ত্র আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধ করা এবং তাদের গতিবিধি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। উদ্ধার হওয়া চাঁদা রশিদ বই থেকে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের আর্থিক কার্যক্রম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে যামিনীপাড়া ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক বলেন, “পার্বত্য এলাকার নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে এলাকায় চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না।”
যামিনীপাড়া ব্যাটালিয়ন সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ চাঁদাবাজি, অস্ত্রধারী আধিপত্য এবং সহিংসতার মাধ্যমে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে আসছে। নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়মিত টহল ও অভিযান এই ধরনের কার্যক্রম দমন করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।