ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে চাঁদা দাবি: রামগড়ে কাঠ ব্যবসায়ীর ওপর চাপ সৃষ্টি ইউপিডিএফের
![]()
নিউজ ডেস্ক
পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে তোলার উদ্দেশ্যে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ। সাম্প্রতিক ঘটনায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের নাভাঙ্গা এলাকায় এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছে সংগঠনটির সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামগড়ের ব্যবসায়ী মো. কবির সম্প্রতি নাভাঙ্গা এলাকায় একটি সেগুন বাগান ক্রয় করেন। বাগানে কাজের জন্য তিনি লেবার মো. সিদ্দিক মিয়া (৩৫) এবং গাড়িচালক মো. মহিন (২৪)-কে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন ধরে বাগানে যাতায়াতের কারণে তাদের সঙ্গে বাগানের কেয়ারটেকার হরি কুমার ত্রিপুরা ও তাঁর পরিবারের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
কিন্তু এই পারস্পরিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই এলাকায় বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়ায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ স্থানীয়ভাবে প্রচার শুরু করে যে, বাঙালি ব্যবসায়ীদের কর্মচারীরা কেয়ারটেকারের মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।
পরবর্তীতে সংগঠনটির সদস্যরা কেয়ারটেকারের পরিবারকে হাচুকপাড়া এলাকায় “জরুরি বৈঠকের” নামে ডেকে নিয়ে ঘটনাটিকে ধর্ষণের মামলা হিসেবে রূপান্তর করতে চাপ সৃষ্টি করে এবং “অর্থনৈতিক সমাধান” বা চাঁদা আদায়ের প্রস্তাব দেয়।
ব্যবসায়ী কবির জানান, ইউপিডিএফ সদস্যরা তাঁকে গত ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে হাচুকপাড়া তলব করে এবং তাঁর লেবার ও গাড়িচালককে তাদের হাতে তুলে দিতে বলে। একইসঙ্গে তাঁকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরদিন (৯ অক্টোবর) তাঁকে আবারও অর্থ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ পাঠানো হয়।
কবির বলেন, “আমি একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে। এখন আমি মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং বাগানে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
ভুক্তভোগী শ্রমিক সিদ্দিক মিয়া মানিকছড়ির ২ নম্বর বাটনাতলী ইউনিয়নের ডাইনছড়ি গ্রামের মৃত ওহিদ মিয়ার ছেলে। চালক মহিন একই ইউনিয়নের সাধুপাড়া এলাকার মো. নুরুন্নবীর পুত্র। কেয়ারটেকার হরি কুমার ত্রিপুরার দুই মেয়ে কাজল ত্রিপুরা (২১) ও দীপিকা ত্রিপুরা (১৮) নাভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।
ব্যবসায়ী কবির জানান তিনি অভিযোগ নিয়ে মানিকছড়ি থানায় গেলে থানা থেকে ঘটনাস্থল রামগড় উল্লেখ করে তাকে রামগড় থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এলাকায় ভয়ভীতি সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনাটি পার্বত্য অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টির নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।