করোনা পরিস্থিতিতে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের পরিকল্পনা গ্রহণ, ১০ হাজার হতদরিদ্র পাচ্ছে ত্রাণ সামগ্রী
 
                 
নিউজ ডেস্ক
সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও দেখা দিয়েছে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। এমন অবস্থায় সারাদেশে এক প্রকার অঘোষিক লকডাউন চলছে। এরই প্রেক্ষিতে পার্বত্য তিন জেলা পরিষদে ৫০লক্ষ টাকা করে অনুদান প্রদান করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়। অনুদানের অর্থ দিয়ে ত্রান সামগ্রী বিতরণ নিয়ে খাগড়াছড়িতে এবার কাজ শুরু করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ।
গত ৩০শে মার্চ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরী সাক্ষরিত ও গনমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বার্তায় জানানো হয়, ইতিমধ্যেই খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাকে কোভিড-১৯’র বিপর্যয় থেকে মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে শুরু থেকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যেগের পাশাপাশি তিনি নিজেই মাঠ পর্যায়ে সচেতনতমূলক প্রচারপত্র, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ ও গণ পরিবহণে জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজে অংশ নেন।

করোনা মোকাবেলায় পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স-এর চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির পরামর্শক্রমে কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে জেলা পরিষদের পক্ষ হতে। সংকট মোকাবেলায় পরিষদ করোনা সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহকে করোনা সচেতনতামূলক কাজে আর্থিক সহায়তা, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অনুকূলে ৫০০ পিস পিপিইসহ অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।
এছাড়াও করোনাভাইরাস জনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীনলোক (যেমন-ভিক্ষুক,ভবঘুরে, দিনমজুর, রিক্সাচালক, ভ্যানগাড়ি চালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা,চায়ের দোকানদার) যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে সংসার চালায় সে সকল জনসাধারণের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিষদ হাতে নিয়েছে।
জানা যায়, এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা পরিষদ সদস্য আশুতোষ চাকমার নেতৃত্বে দীঘিনালা, রামগড়, মানিকছড়ি উপজেলা, জেলা পরিষদ সদস্য খগেশ্বর ত্রিপুরার নেতৃত্বে
পানছড়ি, মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা ও জেলা পরিষদ সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরীর নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা উপজেলায় কার্যক্রম
পরিচালনা করবেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, এ কার্যক্রমের আওতায় জেলায় মোট ১০হাজার দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবার, প্রতি পরিবার ১০কেজি চাল, ৫০০গ্রাম ডাল, ৫০০গ্রাম তৈল ও ১কেজি আলু পাবেন। জরুরি ভিত্তিতে উপকারভোগীদের অগ্রাধিকার তালিকা করার দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। দুঃস্থ, দরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য সরবরাহ কাজে ৪২ লক্ষ টাকা, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ৫০০ পিস পিপিইসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ সাড়ে ৩লক্ষ টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনা সচেতনতা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহের করোনা সচেতনতামূলক কাজে আর্থিক সহায়তা, প্রচারপত্র, স্টিকার ও ব্যানার তৈরি কাজে কিছু টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তিনি আরো জানান,খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার অবস্থার প্রেক্ষিতে পরিষদ প্রয়োজনে আরো নতুন কার্যক্রম হাতে নেবে। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাকে করোনা’র বিপর্যয় থেকে মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
