রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে হেডম্যান কর্তৃক সরকারি খাস জমি বিক্রির অভিযোগ - Southeast Asia Journal

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে হেডম্যান কর্তৃক সরকারি খাস জমি বিক্রির অভিযোগ

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

 

নিউজ ডেস্ক

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়িতে এক হেডম্যান কর্তৃক একটি খাস ভূমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। উক্ত উপজেলার ৩৭ নং আমতলী ইউনিয়ন ও ৩৮৫ নং মৌজার সরকারি খাস জমিটি দখলের অপচেষ্টায় স্থানীয়দের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, আমতলী ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরীর ভগ্নিপতি মোঃ রেজাউল করিম সম্প্রতি স্থানীয় শহীদ মিনারের পাশের খালি জায়গায় রাতের আধাঁরে বাঁশ খুটি নিয়ে খাস জমি দখলে গেলে স্থানীয় জনগন ও আনসার ভিডিপির সদস্যদের বাধাঁর মুখে আটকে যায় দখল প্রক্রিয়া। সৃষ্ট ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠে উভয় পক্ষের।

স্থানীয়রা জানায়, শহীদ মিনারের পাশের খালী জায়গাটি ১৯৮৩ সাল হতে আনসার ভিডিপির ইউপি ক্লাবের স্থাপনা ছিল। নষ্ট হওয়ার পর এখনো ঘর পুনঃস্থাপন না হওয়ায় উক্ত খালী জায়গাটি সম্প্রতি দখলে নিতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন রেজাউল করিম। তিনি নিরাপত্তাবাহিনীর একজন সদস্য বলে জানা যায়। ঘটনায় স্থানীয় জনগন ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বাঘাইছড়ি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আমাতলী ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করণ ও প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন।

এদিকে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে গত রবিবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টায় বাঘাইছড়ি থানার ওসি এম এ মনজুর আলম, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম , আমতলি পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আনিছুর, আমতলি ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী ও ৩৮৫ নং মৌজা প্রধান হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমার সমন্বয়ে বাদী-বিবাদী ও স্থানীয়রা উপস্থিত থেকে বিরোধপূর্ণ খাস জমি (শহীদ মিনারের পাশের খালি জায়গাটি) কে সর্বপ্রথম (১৫ শতক) ১৯৯৩ সালে আনসার ভিডিপি ক্লাব, যুবজাগরনী ক্লাব (১৫ শতক) ২০০৭ সালে, শহীদ মিনার (১৫ শতক) ২০১৫ সালে ও সর্বশেষ মোঃ রেজাউল করিম (১৫ শতক) ২০১৮ দেখিয়ে প্রায় (৬০ শতক) জমি হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা কর্তৃক একই জায়গা নগদ অর্থের বিনিময়ে বিক্রির সুপারিশ করেন ।
উক্ত বৈঠকের সিদ্ধান্তক্রমে খালি জায়গায় আপাতত কেউ দখলে যাবেনা মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সূত্র মতে, হেডম্যানের সুপারিশ কৃত জায়গা (৬০ শতক) থাকলেও সমতল খালি জায়গা ততটুকু নেই। শহীদ মিনারের পাশের সমতলের পরে বিশাল আকারে এক খাল রয়েছে।

এ ব্যাপারে হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল চৌধুরী ঘটনার বিবরনে বলেন, স্থানীয়দের সাথে তিনিও জমি দখলে নিষেধ করেছিলেন ভগ্নিপতি রেজাউল করিমকে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জায়গায় ঘর তৈরি করতে নিষেধ করিলে তাকে মারধরের চেষ্টা চালায় ভগ্নিপতি রেজাউল করিম। এছাড়া ও রেজাউলের বসতভিটার পাশে স্থানীয় বন বিভাগের কিছু জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।

বন বিভাগের জায়গা দখলের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় বন বিভাগ কর্মী মোঃ ফজলুর রহমান।

এ ঘটনায় দোষী রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় মৌজা হেডম্যান সুভাষ চন্দ্র চাকমা থেকে ১লক্ষ সত্তর হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি শহীদ মিনারের পাশের খালী জায়গাটি ক্রয় করেন। দখলে গেলে বাধার সম্মুখীন হন। তিনি জানতেন না জায়গাটি বিরোধপূর্ণ হবে।
হেডম্যান জায়গার সুপারিশে বা টাকার বিনিময়ে জায়গা প্রদান করতে পারে কিনা প্রশ্নের জবাবে রেজাউল বলেন, আরো অনেকের কাছে তিনি এভাবে জমি বিক্রি করেছেন জেনেই তিনি জমি ক্রয় করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু বলেন, খাস জমি সরকারের। এখানে কেউ দখলে গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।