মজিদকে সভাপতি ও লোকমানকে সম্পাদক করে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কমিটি গঠন
 
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকৌশলী আব্দুল মজিদকে সভাপতি, লোকমান হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক ও শাহাদাত হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২৬ আগষ্ট বুধবার বিকেলে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটির অনুমোদন দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আলকাছ আল মামুন ভূইয়া ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ শাব্বির আহমেদ, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, দপ্তর সম্পাদক লোকমান হোসেন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা মোর্শেদা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বজায় রেখে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি’ সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী শান্তিবাহিনী আত্নসমর্পন করলেও কিছু অস্ত্র জমা দিয়ে তাদের সশস্ত্র তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। চাঁদাবাজির টাকায় তাদের অস্ত্রের ভাণ্ডার দিন দিন আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। আর এই চাঁদাবাজির টাকার লোভে জনসংহতি সমিতি ভেঙ্গে একের পর এক মোট চারটি উপজাতীয় আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্ম হয়েছে। যার ফলে এ অঞ্চলের মানুষ চুক্তির কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না। তারা বলেন, পাহাড়ের চারটি সশস্ত্র সংগঠন একদিকে যেমন চাঁদাবাজি ও রাহাজানির মাধ্যমে জনজীবন বিপন্ন করে তুলেছে, অন্যদিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে প্রায়ই তারা নিজেরাই সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে জীবন ও সম্পদের হানি ঘটিয়ে পাহাড়ের পরিবেশ আরো ঘোলাটে করে তুলছে। তাদের আধিপত্য বিস্তারের অংশ হিসেবেই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ি-বাঙালি কেউ সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন থেকে রেহাই পাচ্ছে না। একটি বিশেষ গোত্র ছাড়া অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ আজ এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিনিয়তই সবুজ পাহাড়ে রক্ত ঝরছে। কখনও বাঙালিদের আবার কখনও বা পাহাড়িদের। খুনের পাশাপাশি পাহাড়ের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্প ও কৃষি খাত স্থবির হয়ে রয়েছে চাঁদাবাজির যাতাকলে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি করে এবং উপজাতীয়দের বিপন্নতা প্রদর্শন করে আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্পর্শকাতর জাতীয় ইস্যুতে বিদেশী শক্তিকে জড়ানো হচ্ছে বলে সকল আলামত স্পষ্ট। এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে মোঃ রেজাউল করিম মাষ্টার, এসএম মাসুম রানা, সহ-সভাপতি পদে মোঃ তাহেরুল ইসলাম, মোঃ মোক্তাদির হোসেন, নিজাম উদ্দিন (সাংবাদিক), এসএম হেলাল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ রবিউল হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, মোঃ জালাল, মোঃ রবিউল ইসলাম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আমিরুল ইসলাম ইমন, মোঃ খোরশেদ, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ হুমায়ন, অর্থ সম্পাদক পদে কাজী নজরুল ইসলাম, অর্থ বিষয়ক সহ সম্পাদক মোঃ আল আমিন, মোঃ তারেক, দপ্তর সম্পাদক পদে জুয়েল দেবনাথ, সহ দপ্তর সম্পাদক পদে মোঃ কাউছার, মোঃ রাজু, প্রচার সম্পাদক পদে মোঃ আফসার উদ্দিন, সহ প্রচার সম্পাদক পদে মোঃ পারভেজ আহম্মেদ, মোঃ রনি, মোঃ রাসেল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আছাদ মিয়া, মোঃ শিহাব, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পংকজ দাস, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলম, জনকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামীম হোসেন, জনকল্যান বিষয়ক সহ সম্পাদক মোঃ তালেব মেম্বার, মোঃ আম্বর আলী, আইটি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সোলেমান, মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক্স বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম, সহ সম্পাদক মোঃ মোবারক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে মোঃ ওমর ফারুক জনি, সহ সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসেন, নুর হোসেনসহ ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি সংগঠনগুলো বিলুপ্ত করে “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ” নামের একটি সংগঠন আত্নপ্রকাশ করে। সেসময় এই সংগঠনের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদ নামের দুটি সংগঠনের নাম ঘোষণা করা হয়।
