পাহাড়ে অসহায় নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র শেফালিকার গল্প

পাহাড়ে অসহায় নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র শেফালিকার গল্প

পাহাড়ে অসহায় নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র শেফালিকার গল্প
“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

মোঃ সাইফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি

প্রাচীনকাল থেকেই নারীর ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন একরকম অনিবার্য হিসেবেই চলে আসছে। বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিদিনকার ঘটনা। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে পদে পদে নির্যাতিত হচ্ছে নারী। বর্তমানে বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ দিকটি কত প্রকট হয়ে উঠছে তা প্রতিদিনকার পত্রিকার পাতা খুললেই আমাদের চোখের সামনে ধরা দেয়। প্রতিনিয়ত নারীরা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, শারীরিক নির্যাতন এমনকি হত্যার শিকার হচ্ছে। ধর্ষণের পাশাপাশি হত্যা ও আত্মহত্যার প্রবনতাও বাড়ছে। বাড়ছে ব্যাপক মাত্রায় পারিবারিক নির্যাতন। অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামেও বাঙ্গালী সমাজ ও পাহাড়ী সমাজে শোষিত হয়ে আসছে নারীরা। পাহাড়ী সমাজে তথাকথিত প্রথাগত সমাজ ব্যবস্থার দোহাই দিয়ে যুগের পর যুগ চলচে নারী নির্যাতন। আর এসব নির্যাতন, সহিংসতা ও নিপীড়ন প্রতিরোধে উপজাতি শাসিত গ্রামের এক গৃহবধু শেফালিকা ত্রিপুরা সম্পূর্ণ একক ভাবে পুরো পাহাড় জুড়ে গড়ে তুলেছেন এক সুবিশাল নেটওয়ার্ক। যার মাধ্যমে পাহাড়ে নারীরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে বুঝতে শিখেছে, প্রতিরোধ করতে শিখেছে নির্যাতন আর সহিংসতা।

খাগড়াছড়ি জেলা শহরের প্রবেশদ্বার চেঙ্গীসেতু লাগোয়া ছিমছাম একটি বাড়ি। এটি শুধু বাড়ি নয়, আশ্রয়কেন্দ্রও। নির্যাতিত, নিপীড়িত ও সহিংসতার শিকার নারী-শিশুর নিরাপদ ঠিকানা। বিপদে পড়লেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সবাই ছুটে যান ওই বাড়ির মানুষের কাছে। বিপদগ্রস্তদের নিজ বাড়িতে আশ্রয় দিতেই যেন অপেক্ষায় থাকেন তিনি। তাঁর নাম শেফালিকা ত্রিপুরা। স্বামী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

১৯৬০ সালের ৬ ডিসেম্বর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী মাটিরাঙা উপজেলার তৈইলাইফাং গ্রামে জন্ম শেফালিকার। বাবা গোপালকৃষ্ণ ত্রিপুরার চাকরিসূত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যেতে হলেও দুর্গম ওই গ্রামে থাকতেই দেখেছেন নানা সংকট আর সহিংসতার চিত্র। কাছ থেকে দেখা হয়েছে নারীদের প্রতি নানা নির্যাতন আর অবর্ণনীয় অবহেলার দৃশ্য। এর মধ্যেই বেড়ে উঠা তাঁর। ওই এলাকায় কঠিন বাস্তবতার মুখেও নারীদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম দেখেছেন। দীর্ঘসময় ধরে এক চালার নিচে সংসার করেও এক কাপড়ে ঘর ছেড়ে বের হওয়ার ঘটনায় নাড়া দেয় তাঁকে। ছোটবেলায় সপ্তম শ্রেনীতে পড়ালেখা করার সময় নিজ বাড়ির পাশের এক ত্রিপুরা গৃহবধুর বঞ্চনা দেখে শিউরে উঠেন শেফালিকা। দীর্ঘ ১৭ বছর সংসার করার পরেও স্বামীর একক সিদ্ধান্তে কি ভাবে একটি উপজাতি সাধারণ মেয়ের সংসার ভাঙে, কিভাবে সোনার সংসার বিষাক্ত হয়ে উঠে তা নিজ চোখেই প্রত্যক্ষ করেন তিনি। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন এভাবে তো সবকিছু অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকা যায় না। কিন্তু কি আর করা, তিনি নিজেই তখন একজন ছাত্রী। তবুও মনের মধ্যে পুষে রাখেন নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রবল ইচ্ছা।

মাধ্যমিক পর্যন্ত জেলার মাটিরাঙার তবলছড়ি কদমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে (টি কে স্কুল) পড়াশোনা করেন শেফালিকা ত্রিপুরা। অপ্রত্যাশিতভাবে কম বয়সে বিয়েও হয় তাঁর। ১৯৭৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন। শিক্ষক স্বামী অলিন্দ্র ত্রিপুরার বিশেষ আগ্রহে লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক কাজকর্মেও জড়িয়ে যান। অবশ্য মা মঙ্গলপ্রভা ত্রিপুরা আর বাবা গোপালকৃষ্ণ ত্রিপুরার উৎসাহ না পেলে আজকের শেফালিকা ত্রিপুরা হওয়া সম্ভব ছিল না বলে মনে করেন তিনি। স্বামীর চাকরিসূত্রে ১৯৮৪ সালে জেলার দীঘিনালায় গিয়ে নারীদের নিয়ে প্রথম সমিতি গড়ে তোলেন। নারী ও শিশু বিষয়ক পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রশিক্ষণ ও বিসিকের সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁর কর্ম তৎপরতায় গতি আসে। ১৯৮৬ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান সহিংসতার মধ্যেও সমিতির কার্যক্রম থামেনি। পরিস্থিতির কারণে জেলা সদরের খাগড়াপুরে চলে এসে পুনরায় নারীদের সংগঠিত করেন শেফালিকা ত্রিপুরা।

পাহাড়ে অসহায় নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র শেফালিকার গল্প
শেফালিকা ত্রিপুরা

শেফালিকা ত্রিপুরার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাগড়াপুর ত্রিপুরা মহিলা কল্যাণ সমিতি নামে সংগঠনটি রেজিস্ট্রেশনকালে বাধ্যবাধকতার কারণে ত্রিপুরা শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর জাতীয় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে কাজ করে দক্ষতার উন্নয়ন ঘটলে ২০০৩ সালে ডানিডার ‘কমিটমেন্ট লেটার’ লাভ করার ফলে সহজেই এনজিও ব্যুরোর রেজিস্ট্রেশন মেলে। সেই থেকে শেফালিকা ত্রিপুরা ও তাঁর সহকর্মীরা নারী অধিকার, পরিবেশ উন্নয়ন, সামাজিক দ্বন্দ্ব উত্তরণ ও কাউন্সিলিংসহ নানা বিষয়ে দেশে-বিদেশে প্রচুর প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। দুর্বার নেটওয়ার্ক, উইমেন্স রিসোর্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ ছাড়াও কয়েকটি সংস্থার সাথে সংযুক্ত হয়ে নারীকর্মী শেফালিকা ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন নারীনেত্রী। নারী অধিকার সংগঠকও।

বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে শীর্ষ নারী এনজিও শেফালিকা ত্রিপুরার খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতি। ওই সংগঠনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ও সভানেত্রী, তিনি উইমেন্স রিসোর্স নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক ও মালেয়ার নির্বাহী সদস্য। ইতিমধ্যে জাপান, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভারত, নেপালসহ বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন। স্টাডি ট্যুরে শিখেছেন নারী ও শিশু অধিকারের নানা বিষয় আর কৌশল। দূর দূরান্তের বাড়িতে গিয়েও তিনি খোঁজ নেন সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের। জেলার কোথাও কিছু ঘটতেই খবর যায় শেফালিকা ত্রিপুরার কাছে। সাংবাদিক জানার আগেও তিনি জেনে যান! নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় তিনি এতটাই ব্যতীত হন, নির্যাতিতার জন্য কিছু না করে ঘরে ফিরেন না। এলাকার পুলিশ, সাধারণ মানুষ থেকে সংবাদকর্মীরা সকলের কাছেই তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। সুবিধাভোগীদের কাছে তিনি নানা উপাধিতে ভূষিত হলেও খাগড়াছড়িতে তাঁকে সবাই চিনেন ‘নারী অধিকারে নিবেদিত প্রাণ’ হিসেবেই। অসহায় নারীদের কথা শুনে কাউন্সিলিং, সমঝোতা বা সমন্বয় করে দেয়াই যেন তার মূল কাজ। জীবনের অধিকাংশ সময়টুকুই ব্যয় করলেন নারী উন্নয়নে। নারীর ক্ষমতায়নে তার অবদান অনস্বীকার্য বলে জানেন অন্য নারী অধিকার কর্মীরাও। নিজের ছেলে-মেয়েদেরও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন, তবে তারা সুযোগ থাকার পরেও বিলাসিতার জীবনে পা দেয়নি। মায়ের সাথেই বেঁছে নিয়েছেন কর্দমাক্ত এই পথ।

শেফালিকা ত্রিপুরার নিজের ঘরই যেন নির্যাতিত নারীদের অভয়াশ্রয়। কী বাঙালি, কী পাহাড়ি; সবার ঠিকানা একটিই। মর্তরিকা ত্রিপুরা স্বামীর দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়ে গত সাত বছর ধরে থাকছেন শেফালিকা ত্রিপুরার বাড়িতে। এক সন্তান নিয়ে নিজের ঘরের মতো থাকেন এখানে। লেখাপড়াও শিখছেন মর্তরিকা। এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। হাসিনা বেগমের বাড়িও যেন এটি। যৌতুক না দেওয়ায় তাঁর মেয়ে হালিমা বেগমকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন চার বছর আগে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় একদিকে আদালতে মামলা পরিচালনা, অন্যদিকে হাসিনা বেগমের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজ বাড়িতেই রেখেছেন নারী অধিকার নেত্রী শেফালিকা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করার সুযোগে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনৈক দোকানদারের সাথে একসঙ্গে ছিলেন বাক প্রতিবন্ধী নিলুফা বেগম। পরে সমঝোতার মাধ্যমে বিয়ে করলেও ছেড়ে চলে যায় প্রতারক দোকানদার। জেলার মাটিরাঙা উপজেলার গুমতি ইউনিয়নের এই বাক প্রতিবন্ধীর যখন কোনো অভিভাবক ছিল না। আদালত তাঁকে অভিভাবক হিসেবে শেফালিকা ত্রিপুরার হাতে তুলে দেন। প্রতিবন্ধী নিলুফা বহুদিন ছিলেন ওই বাড়িতে। অন্যদিকে সীমা সাহা (ছদ্মনাম) মায়ের জোরাজোরিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম নিবাসী জনৈক লিটন সাহাকে (ছদ্মনাম) বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে নানা শারীরিক নির্যাতনের কারণে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হয় মেয়েটি। পরবর্তীতে সামাজিক বিচার-আচারে বাড়িতে ফিরলেও মায়ের মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে আদালতের শরণাপন্ন হন। মায়ের বাড়ি নিরাপদ মনে না করায় নারীনেত্রী শেফালিকার বাড়িতে ঠিকানা হয়েছে সীমা সাহার। গত এক বছর ধরে সেখানেই থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্লার ও কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। সরকারের আইনি সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি আইনের আওতায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে চলছে তাঁকে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া। এসবের সমন্বয় করছেন শেফালিকা।

এর বাইরেও খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে উপজাতি ৪ যুবক কর্তৃক উপজাতি ৪ যুবতীকে ধর্ষন, জেলা সদরের ৯মাইল এলাকায় কৃত্তিকা ধর্ষনের পর হত্যা, রামগড়ে এক উপজাতি কিশোর কর্তৃক নাবালিকা এক উপজাতি মেয়েকে ধর্ষনের ঘটনায় সোচ্চার ছিলেন এই নারী জাগরনের পুরোধা শেফালিকা ত্রিপুরা।

মর্তুরিকা, হাসিনা ও সীমার মতো আরো অসংখ্য নির্যাতিত, নিপীড়িত নারীর অভিভাবক শেফালিকা ত্রিপুরা। ইতিপূর্বে এমন অনেককে আশ্রয় দিয়েছেন। দিয়েছেন আইনি পরামর্শ। নারীর হাজারো বাধা উতরাতে পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কখনো কখনো আদালতই ঘটনার শিকার নারীদের শেফালিকা ত্রিপুরার হেফাজতে দেন। চুরির ভুয়া মামলায় গ্রেপ্তার এক নারী এবং জেলা সদরের জনৈক চিকিৎসক দম্পতির সন্তানকেও তাঁর হেফাজতে দিয়েছিল আদালত।

নারী অধিকার রক্ষা ও ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখায় ইতিমধ্যে সম্মাননা পেয়েছেন এই নারী অধিকার সংগঠক। ২০১৩ সালে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারিভাবে ‘জয়িতা’ পুরস্কারে ভূষিত হন। এর আগে ২০০৬ সালে সামাজিক কাজে ভূমিকার কারণে ‘অনন্যা শীর্ষদশ’ লাভ করেন। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের গুণীজন সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সর্বশেষ উইমেন ইন্ট্রাপ্রেনিউরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব) এর পক্ষ হতে সম্মাননা পান শেফালিকা ত্রিপুরা। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এই পুরস্কারটি দেওয়া হয়। আরো বেশ কয়েকটি সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেন শেফালিকা।

আলাপচারিতায় বয়সের ভারে কিছুটা ক্লান্ত নারীনেত্রী শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, ‘বিশেষত শিক্ষা-দীক্ষাহীনতার মাঝে জুমচাষ করে অভাবের সংসার, বাল্যবিয়ে আর নানা পারিবারিক অশান্তি দেখে তাড়িত হয়েছি। জেলা সদরের খাগড়াপুরে শতাধিক নারীকে একত্রিত করে গড়ে তুলি সংগঠন।’ শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, ‘আমার ধ্যানে-জ্ঞানে নারীকল্যাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এছাড়া সচেতনতা সৃষ্টি এবং নারীদের বিভিন্ন অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখতে পারলেই ভালো লাগে।’ তিনি জানান, খাগড়াছড়িতে তাঁর মতো আরো অনেক নারীকর্মী নারীর প্রতি বৈষম্য রোধ ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে কাজ করছেন। তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান শেফালিকা। বিশেষত বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জোটসমূহকে আরো শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন তিনি।

তিনি বলছেন, পাহাড়ের নারীরা আজ রাজনীতি বেশ এগিয়ে গেলেও পাহাড়ে প্রথাগত সমাজ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি পাহাড়ী সমাজ। আর তাই রাজনীতির বাইরে থেকেই তার এ পথাচলায় তিনি পাহাড়ে গড়ে তুলতে চান নারী-পুরুষের সমতা ভিত্তিক একটি সুন্দর বৈষম্যহীন সমাজ।

নারী ও শিশুর সামগ্রিক অধিকার আদায়ে শেফালিকা ত্রিপুরা একজন অগ্রজ মানুষ। যাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো বহু উপাদান পাওয়া যায়। বিশেষত নিপীড়িত নারীদের আশ্রয় দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। তাঁর অসীম ধৈর্য, সহনশীলতা ও একাগ্রতা রয়েছে। নিজের অসুস্থতার মধ্যেও তিনি অদম্য মানসিক শক্তি নিয়েই নারী অধিকারে কাজ করেন।

লেখক: সংবাদকর্মী।