মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকান্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা, ১৩ দফা সুপারিশ

নিউজ ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মেরিন ড্রাইভে গত ৩১শে জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। এ ঘটনায় মোট ৬৮ জনের বক্তব্য গ্রহণ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। এসব বক্তব্য এবং প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করে কমিটির সকল সদস্য সর্বসম্মতভাবে ১২ দদফা সুপারিশসহ প্রায় ৮০ পৃষ্টার প্রতিবেদনটি ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন কমিটি জমা দিয়েছে। এটি এখনই প্রকাশ করা হবে না। প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। এছাড়া প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার ৩৫ দিনের মাথায় রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য প্রতিবেদনে ১৩টি সুপারিশ করেছে এ কমিটি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগষ্ট টেকনাফের বাহারছড়ায় পুলিশের গুলিতে মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় গত ২ আগষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলিকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে সদস্য করা হয়েছিল কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি।
কিন্তু একদিন পর (৩ আগষ্ট) পুনরায় উক্ত তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে পুনর্গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে কমিটির প্রধান করা হয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। আর সদস্য করা হয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডারের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদকে।
গত ৩ আগষ্ট তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছিল। এসময় কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সরকার ৭ কর্মদিবস সময় নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এ নিয়ে তিন দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় ২৪ আগষ্ট পর্যন্ত পরে সময় বাড়িয়ে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে না পারায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিতে আরো ৭ দিনের সময় চায় এবং তা বাড়ানো হয় ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একপর্যায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত দল।