৯৭% পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন
![]()
নিউজ ডেস্ক
চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের তৈরি কভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার বায়ো ফার্মা। আর করোনাভ্যাক নামের এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির ভিন্ন অবস্থান কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি বায়ো ফার্মা বলছে, তাদের অন্তর্বর্তী ফলাফলে ভ্যাকসিনটির ৯৭ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। অন্যদিকে খোদ সিনোভ্যাক বলছে, এ কার্যকারিতা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো উপসংহারে পৌঁছার সময় এখনো আসেনি। সিনোভ্যাকের তৈরি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে বায়ো ফার্মা। তবে এ অন্তর্বর্তী ফলাফল চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল থেকে পাওয়া কিনা, সে বিষয়ে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।
বায়ো ফার্মার এক মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অন্তর্বর্তী ফলাফলে দেখা গেছে, করোনাভ্যাক ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করব। আগামী জানুয়ারির শেষের দিকে ইন্দোনেশিয়ার খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের অনুমোদন দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর ভ্যাকসিনটির গণহারে প্রয়োগ শুরু করা সম্ভব হবে।’ বায়ো ফার্মার আরেকজন মুখপাত্র বলেছেন, কোম্পানিটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের সব ফলাফল এখনো হাতে পায়নি। তারা এখনো এ তথ্য সংগ্রহ করছে। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলাকালে ১ হাজার ৬০০ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে কতজনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়েও কোনো তথ্য দেয়নি বায়ো ফার্মা।
এর আগে সিনোভ্যাক জানিয়েছিল, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে যেসব সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি তাদের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে, তাদের ৯৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি-সংশ্লিষ্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। বায়ো ফার্মার বিবৃতির পর তারা এ অ্যান্টিবডির প্রসঙ্গ টেনেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। কোম্পানিটি বলেছে, যে ৯৭ শতাংশ হারের কথা তারা এর আগে বলছে, সেটি আসলে সেরোকনভারশন রেট। সেরোকনভারশন হলো রক্তে শনাক্তযোগ্য মাত্রায় একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়া। সিনোভ্যাক বলেছে, সেরোকনভারশন রেট আর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার হার এক নয়। সেরোকনভারশন রেট বেশি হলেও একটি ভ্যাকসিন যে জনগণকে কার্যকরভাবে কভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা দিতে পারবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
এর আগে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন কভিড-১৯ প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর বলে দাবি করা হয়। তবে এ দাবির বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হলে নতুন করে আবার বিশ্বব্যাপী ট্রায়ালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তারা ছাড়াও মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি ৯৫ শতাংশ এবং আরেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান মডার্নার ভ্যাকসিন ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে বলে দাবি করা হয়। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের গণহারে প্রয়োগ শুরু হয়েছে।