রাঙামাটিতে যুবলীগ নেতাকে অপহরণ, অভিযোগের তীর জেএসএস (সন্তু)’র দিকে
 
নিউজ ডেস্ক
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পাইওখ্যই মারমাকে অপহরণ করেছে অজ্ঞাত উপজাতি সন্ত্রাসীরা। গত ১৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীরা তাঁকে তার নিজ বাড়ী চিৎমরম এর মৈইদং পাড়া থেকে অপহরণ হয় বলে জানা যায়।
কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অপহরণের খবর জানার পর ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের একটি দল মৈদং এলাকায় পৌঁছে। এছাড়া শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে চন্দ্রঘোনা থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির এর নেতৃত্বে থানা পুলিশ এর আরোও একটি দল অপহৃত যুবলীগ ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক পাইওখ্যই মারমাকে উদ্ধারে ঐ এলাকায় তল্লাশি চালায়। অন্যদিকে কাপ্তাই জোনের সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মৈদং এলাকায় অপহৃত ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্ধারে ঐ এলাকায় চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পাইওখ্যই মারমাকে অপহরণে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাঙামাটি জেলা যুবলীগ। রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা ও অপহৃত যুবলীগ নেতাকে উদ্ধারে জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এদিকে, অপহৃত যুবলীগ নেতা পাইওখ্যই মারমাকে জীবিত উদ্ধারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার সকালে কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অংসুইছাইন চৌধুরী নেতৃত্বে চিৎমরম এলাকায় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি চিৎমরম বাজার থেকে বের হয়ে চিৎমরম বড়পাড়া, চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ও চিৎমরম হেডম্যান পাড়া প্রদক্ষিণ করে চিৎমরম বাজারে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. হানিফ, কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক থোয়াইচিং মারমা, সাবেক সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ ছিদ্দিক, চিৎমরম ইউপি আ.লীগের সভাপতি নেথোয়াই মারমা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মানিক, সম্পাদক একরামুল হক, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সামশুদ্দিন, চিৎমরম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ওয়েশি মং চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন চৌধুরীসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসের সন্ত্রাসীরা যুবলীগের এই নেতাকে অপহরণ করেছে দাবি করে কাপ্তাই উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী জানান, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁকে জীবিত উদ্ধারের জন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। তা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ ছিদ্দিক জানান, ইতিমধ্যে জেএসএসের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা চিৎমরমে এক যুবলীগ নেতাকে হত্যা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় তারা পাহাড়ে একের পর এক খুন, অপহরণ করে যাচ্ছে এবং গতকাল এই নেতাকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা।
এছাড়াও অপহৃত যুবলীগ নেতাকে উদ্ধারের দাবিতে শনিবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে জেলা যুবলীগ। সন্ধ্যায় পৌরসভা চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বনরূপা আলিফ মার্কেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সভা। প্রতিবাদ সভায় জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
