বান্দরবানে নওমুসলিম হত্যার প্রতিবাদ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের

“এখান থেকে শেয়ার করতে পারেন”

Loading

নিউজ ডেস্ক

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের নওমুসলিম ওমর ফারুককে উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক হত্যারর প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের পক্ষ হতে ২০ জুন রবিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ মনে করে, এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিনিয়ত বিনষ্ট হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কাজ করা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উচিত এই সমস্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জেনেছি শুধুমাত্র ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণেই এই ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল। শুক্রবার রাতে নামাজ পড়ে যাওয়ার পথে তাকে হত্যা করা হয়। শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এভাবে হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ ইতিপূর্বে ঘটেছে কিনা আমাদের জানা নেই। আমরা মনে করি ধর্ম প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাধীনতার বিষয়। ধর্মান্তরিত হলে কোন ব্যক্তির জাতীয়তা পরিবর্তন হতে পারে না। কারণ জাতীয়তা ব্যক্তির বংশপরিচয়, আর ধর্ম বিশ্বাসগত পরিচয় বহন করে।

পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে উদাত্ত আহ্বানও জানায় সংগঠনটি।

এর আগে, গত ১৮ জুন শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রোয়াংছড়ি উপজেলার রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের তুলাছড়ি আগা পাড়া এলাকায় ওমর ফারুক (৫৪) নামে এক নওমুসলিম মসজিদের ইমামকে গুলি করে হত্যা করেছে উপজাতি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

নিহত ওমর ফারুক রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের তুলাছড়ি আগা পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি নওমুসলিম। তার জন্মগত নাম পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা। পিতার নাম তয়ারাম ত্রিপুরা। নিহত ওমর ফারুক ত্রিপুরা সম্প্রদায় থেকে কয়েক বছর আগে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে ওই এলাকায় একটি অস্থায়ী মসজিদের ইমামতি করে আসছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর হয়েও খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী একটি গ্রুপ তাকে দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিয়ে আসছিল। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখার ক্যাডাররা জড়িত। ঘটনাস্থল তুলাঝিড়ি পাড়ায় গত কয়েক বছর ধরে নওমুসলিম এর কয়েকটি পরিবারসহ বেশ কিছু পরিবার বসবাস করে আসছিল। তারা সেখানে টিনের ছাউনির কাঁচা ঘরের একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করে। সেখানে নওমুসলিম মোহাম্মদ ওমর ফারুক মসজিদের ইমামতি করে আসছিলেন। শুক্রবার রাতে ৪/৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ঘরবাড়ি ঘেরাও করে ওমর ফারুককে ঘর থেকে ডেকে এনে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করে।