রাঙ্গামাটি থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাচ্ছে মিজোরামের শিকারিরা
নিউজ ডেস্ক
গত দুই দিন ধরে পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটিতে বেওয়ারিশ কুকুর ধরা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, মিজোরাম থেকে আসা শিকারিরা জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবাধে বিচরণ করে এসব বেওয়ারিশ কুকুর ধরছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় কুকুর ধরা অভিযান শুরু হয়। শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের কাঁঠালতলী এলাকায় বেশ কয়েকটি কুকুর ধরার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। শনিবার রাতেও শহরের তবলছড়ি এলাকায় কুকুর ধরা হয়েছে। মূলত: মিজোরাম থেকে আসা শিকারিরা কুকুরগুলো ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সনাতনী ফাঁদে আটকানোর পর মোট দঁড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে কুকুরগুলোকে। প্রতিটি কুকুরের গলায় আটকে দেওয়া হয় শুকনো বাঁশ। বেওয়ারিশ কুকুর ধরায় সহায়তা করছে রাঙ্গামাটি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
জেলা শহরের তবলছড়ি মাঝেরবস্তি এলাকার এক যুবক বলেন, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তবলছড়ি কালীমন্দির এলাকার সামনে তাদের কাছে বেশ কয়েকটি কুকুর দেখা যায়। এরসঙ্গে আমার পালিত কুকুরটিও ছিল। তখন স্থানীয়রা থাকায় আমার কুকুরটি তারা ধরে নিতে পারেনি। এ সময় তাদের সঙ্গে পৌরসভার ময়লা পরিষ্কার করার গাড়িটিও দেখেছি।
কাঁঠালতলী এলাকার মো. বিল্লাল হোসেন, শুক্রবার বিকালে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের দিকে যাচ্ছিলাম। ফুটপাতে দেখলাম একটা কুকুরকে গাছের গোড়ালির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে জানলাম, কারা যেন শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা এসব কুকুর কী করবে তারা জানতে পারিনি।
প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯ এ মালিকবিহীন প্রাণিনিধন বা অপরসারণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, (ক) এই আইনে উল্লেখিত কোনো কারণ ব্যতিত, মালিকবিহীন কোনো প্রাণিনিধন বা অপসারণ করা যাবে না। (খ) কোনো ব্যক্তি মালিকবিহীন প্রাণী হত্যা করলে তা আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে।
জানা গেছে, বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম চালু না থাকায় কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে থাকা এসব কুকুর খাবার সংকটে কারণের নানান সময় হিংস্র আচরণ করে, যার কারণেই অনেকেই নিরীহ প্রাণিদের ওপর বিরক্ত হন।
এদিকে শহরে কুকুর ধরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যারা কুকুরদের ধরছেন তারা এগুলো নিয়ে গিয়ে লালন-পালন করবে বলে আমাদের জানিয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জেলা শহরে কুকুর ধরার বিষয়টি আমি অবগত নই। এ ব্যাপারটি পৌরসভার মেয়র জানতে পারবেন। তবে জেলাপ্রশাসক বলেন, ‘জেলা শহরে কুকুরের আনাগোনা বেড়েছে। কয়েকদিন আগে এক পুলিশ অফিসারকেও কুকুর কামড়েছে এমনটা জেনেছি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসেও খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী বাজার, বাবুছড়া ও থানা বাজার থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যায় মিজোরাম থেকে আসা শিকারিরা।